ঘটা করে গিয়েও অপহৃত চালকের লাশ পায়নি চট্টগ্রামের পিবিআই

পটিয়ায় ৫ ঘন্টার নিস্ফল অভিযান

চট্টগ্রামের পটিয়ার পাহাড়ি এলাকা থেকে দেড় বছর আগে অপহরণের শিকার হওয়া এক গাড়িচালকের লাশের খোঁজে ঘটা করে গিয়েও নিষ্ফল হয়ে ফিরেছে চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের একটি টিম।

শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পটিয়ার পূর্ব হাইদগাঁও দুর্গম পাহাড়ের কালামার ছড়ায় চালানো অভিযানে হাজির ছিলেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসানও।

২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃত হন চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের বাসিন্দা গাড়িচালক মোসলেম উদ্দিন। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করে। এ ঘটনায় অপহৃতের বড় ভাই আবু তাহের বাদি হয়ে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এই মামলার তদন্তভার যায় পিবিআইয়ের হাতে।

চন্দনাইশের ধোপাছড়ি থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পরিমল তঞ্চঙ্গ্যা ও পরিতোষ তঞ্চঙ্গ্যা নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পিবিআই দাবি করেছে, এই দুই আসামি গাড়িচালক মোসলেমকে হত্যার পাশাপাশি তার লাশ গুমের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এরপরই ওই দুই আসামিকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার (৩১ জুলাই) পটিয়ার পূর্ব হাইদগাঁও দুর্গম পাহাড়ের কালামার ছড়ায় অভিযান চালায় পিবিআই। তবে প্রায় পাঁচ ঘন্টা খোঁজাখুঁজি করেও সেখানে লাশের কোনো সন্ধান মেলেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও এটিআর এগ্রো ফার্মের পাশ থেকে আলমগীর আলম নামের এক ব্যক্তি লাকড়ি কিনে ২০২০ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে কয়েক দিন ধরে শ্রমিক দিয়ে পিকআপ ভর্তি করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি শ্রমিকরা লাকড়ি আনতে গেলে গাড়িচালক মোসলেম উদ্দিনকে একদল সন্ত্রাসী অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় পটিয়া ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তিন নেতা জমির উদ্দিন, আজিম উদ্দিন ও সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করলেও পরে ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা পায়নি পুলিশ। এর মধ্যেই বিনা দোষে তাদের প্রায় ছয় মাস জেল খাটতে হয়। তাদের অভিযোগ, এজাহারে তাদের নাম না থাকলেও তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে পটিয়ার পাহাড়ি সীমান্তে মাদক ব্যবসায়ী, উপজাতি ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। শ্রীমাই, বুদবুদি ছড়া, বাডালিয়া, রাঙ্গুনিয়া কমলাছড়ি, বেনিপাড়া, ছিপছড়িপাড়া, ডলুছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা সশস্ত্র মহড়া দেয়। অভিযোগ রয়েছে, প্রায় তারা কাঠুরিয়া, শ্রমিক ও গাড়িচালককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!