গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকার এফডিআর আত্মসাৎ, ইস্টার্ন ব্যাংকের কর্তাসহ ২ জনের কারাদণ্ড

প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) একটি শাখায় গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় দুই জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।

কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ও আর নিজাম রোড শাখার ব্যাংকিং প্রায়োরিটি ম্যানেজার মো. ইফতেখারুল কবির ও চট্টগ্রামের খুলশী থানার ৩ নম্বর লেইনের নিশাত এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো. আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মাহমুদুল হাসান।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালদের বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আসামি মো. ইফতেখারুল কবিরকে ২৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১ কোটি ৪ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপর আসামি মাহমুদুল হাসানকে ১৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ সহ ৭৬ লাখ ৩০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর ৪ মাস কারাদণ্ডেদ আদেশ দিয়েছেন।

দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদুল হক এসব তথ্য জানান। তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। একনম্বর আসামি মো. ইফতেখারুল কবিরকে দেয়া ২৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের মধ্যে কর্মপক্ষে ১৩ বছর সাজা ভোগ করতে হবে। একইসঙ্গে অপর আসামি মাহমুদুল হাসানকে দেওয়া ১৩ বছর কারাদণ্ডের মধ্যে কর্মপক্ষে ৫ বছর কারাভোগ করতে হবে।”

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ইফতেখারুল কবির ক্ষমতা অপব্যবহার ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে অপর আসামি মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে যোগসাজশ করে গ্রাহকের হিসাব থেকে বেনামে হিসাব খুলে অর্থ স্থানান্তর করে। একনম্বর আসামি ইফতেখারুল ২০১৪ সালের ৩ জুলাই ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ও,আর, নিজাম রোড শাখায় কর্মরত ছিলেন।

ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের তিনজন গ্রাহক যথাক্রমে অন্যন্য বড়ুয়া, রুপন কিশোর বড়ুয়া ও সুপ্রভা বড়ুয়ার হিসাব থেকে মোট ৫০ লাখ টাকার এফডিআরের অর্থ গ্রাহক স্বাক্ষর নকল, সীল ও প্যাড জালিয়াতির করে ব্যাংকের রাখা এফডিআরের সমুদ্বয় অর্থ মোট ৫০ লাখ টাকা ফান্ড স্থানান্তর করার নামে উঠিয়ে নেয় আসামিরা।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপসহকারী পরিচালক বর্তমানে সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। তাদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৪২০, ৪০৯, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪৭৭ (ক) ও ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‌‘ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা ১১টি সিরিজ মামলার বিচার কার্য চলমান রয়েছে। তার মধ্যে এটি প্রথম রায়।’

এমএ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!