গৌরবের ১৫০ বছরে চট্টগ্রাম কলেজে সৌরভের সম্প্রীতি

‘চট্টগ্রাম কলেজ আমার-আমাদের কলেজ, গৌরবের ১৫০ বছর’— এ স্লোগানকে সামনে রেখে প্রাণের উচ্ছ্বাসে পালিত হল দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম কলেজের ১৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সম্প্রীতি মেলা।

এ আয়োজনকে ঘিরে চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) জিইসি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয় ‘সম্প্রীতি মেলা ’।

চট্টগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্র সমিতির তিনবারের সাধারণ সম্পাদক ও ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন মজনু, সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল আলম, কার্যকরী সভাপতি এসএম মোরশেদ জাফর, সাধারণ সম্পাদক সংগঠক কবি নিজাম উদ্দিন শারুদের পরিকল্পনায় প্রফেসর অধ্যক্ষ মো. আবুল হাসানের নেতৃত্বে প্রকাশনা উপ-কমিটি, কায়েস চৌধুরীর নেতৃত্বে অর্থ উপ-কমিটি, মো. সদরুল আমিনের নেতৃত্বে অভ্যর্থনা উপ-কমিটি, মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে প্রচার ও মিডিয়া উপ-কমিটি, অমিতোষ সেনের নেতৃত্বে অভ্যর্থনা উপ-কমিটি, এডভোকেট কাওসার পারভীন হক (জুলু) নেতৃত্বে র্যাফেল ড্র উপ-কমিটি, আনোয়ার শহীদ ফরহাদের নেতৃত্বে সাজসজ্জা উপ-কমিটি, মহিউদ্দিন এনায়েত ও হেলাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে শৃঙ্খলা উপ-কমিটি, আহমদ উল আলম চৌধুরী রাসেলের নেতৃত্বে আপ্যায়ন উপ-কমিটি শাফায়াত সুলতানার নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক উপ-কমিটি ,অধ্যাপক মর্জিনা আখতারের নেতৃত্বে উপস্থাপনা উপ-কমিটির সমন্বয়ে সকাল ৮ টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এক অনন্য আয়োজন ছিল।

গৌরবের ১৫০ বছরে চট্টগ্রাম কলেজে সৌরভের সম্প্রীতি 1

‘সম্প্রীতি মেলা ২০১৯’ এ অংশগ্রহনকারীদের জন্য ছিল আকর্ষণীয় স্যুভেনির— ম্যাগাজিন, টি শার্ট, ক্যাপ, কোট পিন ও ক্যালেন্ডার। ছিল সকালের নাস্তা, মধ্যাহ্ন ভোজ, বৈকালিক নাস্তা ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা। সাথে ছিল ক্যাডেট ফোরাম ও দূর্বারের ব্যবস্থাপনায় দিনব্যাপী বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে শুরু হয় সম্প্রীতি মেলা। প্রথমেই ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক দলের সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের অনন্য ডকুমেন্টারি চট্টগ্রাম কলেজ গৌরবের ১৫০ বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যের স্বারক গ্রন্থ। এটি উৎসর্গ করা হয় হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর প্রাক্কালে।

অধ্যাপক মর্জিনা আকতার, মাসুম উদ্দৌলা চৌধুরী, বদরুন্নেছা ও মিশকাতের সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আবুল হাসানের লেখা ও সুরে থিম সংগীতের পরিবেশনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের কার্যকরী সভাপতি এসএম মোরশেদ জাফর। ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য রাখেন সম্প্রীতি মেলার আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সংগঠক নিজাম উদ্দিন শারুদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল আলম, চট্টগ্রাম কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. আবুল হাসান, প্রাক্তন অধ্যক্ষ ফজলুল হক, প্রাক্তন শিক্ষক প্রফেসর এটিএম ছালেহ জহুর, প্রফেসর সুধীর বিকাশ দেব প্রমুখ।

বক্তব্য রাখেন সম্প্রীতি মেলার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি সম্প্রীতি মেলায় উপস্থিত সতীর্থ প্রাক্তন ও নতুন প্রজন্মের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন এবং চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের এক কোটি টাকা ফান্ড গঠনের প্রাক্কালে প্রথম অনুদানকারী হওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

পর্যায়ক্রমে শুরু হয় ওস্তাদ হাসান ঈসমাইলের তত্ত্বাবধান ও সাফায়াত সুলতানা নূপুরের নির্দেশনায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনে চট্টগ্রাম কলেজের অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর সুধীর বিকাশ দেব, ডা. মো. আবু ইউসুফ চৌধুরী, এরশাদুল হক, কবি অরুণ দাশকে (সাথী দাশ) সম্মাননা দেওয়া হয়। মধ্যাহ্ন ভোজের পর শুরু হয় চট্টগ্রাম কলেজের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও স্মৃতিচারণ পর্ব।

স্মৃতিচারণ করেন প্রাক্তন ছাত্র মাওলানা মহিউদ্দিন, ৬৪ সালের ছাত্রী রাজিয়া সুলতানা, বাসনা হোড়, চট্টগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, মিসবাহ উদ্দিন, আবসারুল ইসলাম, সংসদ সদস্য ও কলেজের প্রাক্তন ছাত্র সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, প্রফেসর সালেহ জহুর, অধ্যক্ষ ফজলুল হকসহ অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক।

সাখাওয়াত হোসেন মজনুর সঞ্চালনায় বিশেষ আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বিখ্যাত চিকিৎসক ও চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাশেদ নিজাম ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের রেজিস্ট্রার ড. ডেভ ডোল্যান্ড। এরপর প্রাক্তন শিক্ষার্থী মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও তার দলের পরিবেশনায় ইকবাল হায়দারের একক লোকসঙ্গীত পরিবেশনা, শিল্পী ফাহমিদা রহমান ও লীনা নাজনীন এর সঙ্গীত পরিবেশনা।

সঙ্গীততারকা আইয়ুব বাচ্চু স্মরণে এলআরবির সতীর্থরা পরিবেশন করেন গান। পরে মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ও নাসির আহমেদের সঞ্চালনায় পরিচালিত হয় আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণ। সমাপনী বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল আলম ।

এসবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!