গাড়ি জ্বলেছিল ঠিকই, প্রমাণের অভাবে খালাস বিএনপির ২২ নেতাকর্মী

সাত বছর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপির সমাবেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের জেরে ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্পষ্ট প্রমাণের অভাবে খালাস পেলেন চার্জশিটভুক্ত ২২ বিএনপি নেতাকর্মী।

২০১২ সালের ১৩ মে চট্টগ্রাম নগরীর নাসিমন ভবনের সামনে বিএনপির সমাবেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের জেরে আমিন সেন্টারের সামনে ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় খুলশী থানা পুলিশ দ্রুত বিচার আইনে মামলা করার পর ২২ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিটও দেওয়ার পর বিচার শুরু হয়েছিল বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলমসহ ২২ নেতাকর্মীর।

কিন্তু যে মামলায় পুলিশসহ তিন পথচারী সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা কেউই স্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারেনি চার্জশিটভুক্ত আসামিরাই ইস্পাহানির মোড়ে গাড়িতে আগুন দিয়ে আমিন সেন্টারে ভাঙচুর করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করলেও সেখানেই প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।

এছাড়া যে তিনজন পথচারীকে সাক্ষী করেছে পুলিশ, তারা আদালতে বলেছেন তাদের না জানিয়েই পুলিশ সাক্ষী করেছিল। তারা কাউকেই চিনেন না। গাড়ি পুড়তে দেখলেও চার্জশিটভুক্ত আসামিদের কাউকে আগুন লাগাতে দেখেননি। ফলে দুর্বল সাক্ষ্য প্রমাণের কারণে পার পেয়ে যান চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহ আলমসহ খুলশী থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ২২ নেতাকর্মী।

মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. খায়রুল আমীন এই রায় ঘোষণার মাধ্যমে বিএনপির এসব নেতাকর্মী খালাস পান। এর আগেও পুলিশের দুর্বল তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণের কারণে নগর বিএনপির সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দুটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার জানান, ২০১২ সালের ১৩ মে বিকেলে চট্টগ্রামের নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ১৮ দলের সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংর্ঘষে জড়ায় নেতাকর্মীরা। এর জেরে খুলশী থানার ইস্পাহানি মোড়ে আমিন সেন্টারে ভাঙচুর ও একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর খুলশী থানার তৎকালীন এসআই ওয়ালি উদ্দিন আকবর বাদি হয়ে নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলমহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে বলা হয়, আসামিরা নাসিমন ভবনের সামনে সংঘর্ষের বিষয়টি মোবাইলের মাধ্যমে প্রচার করে আমিন সেন্টারের সামনে এবং নগরীর বিভিন্ন জায়গায় পরিকল্পিতভাবে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বলে অভিযোগ করে পুলিশ।

এ ঘটনায় দীর্ঘ তদন্তের পর পুলিশ এজহারভুক্ত তিনজনকে বাদ দিয়ে অজ্ঞাতনামীয় ছয়জনসহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। কিন্তু আদালত পুলিশের এই চার্জশিট প্রত্যাহার করে এজাহারভুক্ত তিন আসামিসহ মোট ২২ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন। পরে তিনজন পথচারী ও সাত পুলিশ সদস্যসহ মোট দশজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২৭ আগস্ট মামলায় রায় প্রদান করেন আদালত। রায়ে চার্জশিটভূক্ত নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলমসহ ২২ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!