‘গরিবের ডাক্তার’ মোস্তফা কামালের মৃত্যু কাঁদাচ্ছে সবাইকে

করোনার সঙ্গে লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন চট্টগ্রামের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সৈয়দ মোস্তফা কামাল। ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন সর্বত্র।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড (বিএসবি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গত জুনের শেষ দিকে তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা চলে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকার বিএসবি হাসপাতালের আইসিইউতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

ডা. সৈয়দ মোস্তফা কামাল চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দোহাজারী পৌরসভার জামিজুরী গ্রামের প্রয়াত স্কুল শিক্ষক আবু তাহেরের মেজ ছেলে। চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিবাজারের দোভাষ পরিবারের জামাতা ছিলেন তিনি।

‘গরিবের ডাক্তার’ মোস্তফা কামালের মৃত্যু কাঁদাচ্ছে সবাইকে 1

৭০ বছর বয়সী এই চিকিৎসক ছিলেন সত্যিকারের এক কিংবদন্তী। চট্টগ্রামের দোহাজারি-জামিজুরির মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কাছে তিনি ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। চিকিৎসা পেশার শুরু থেকে নিজ গ্রামে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। প্রায় প্রতি শুক্রবার যেতেন গ্রামে। রোগীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন তার জন্য।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন ডা.মোস্তফা কামাল। কাজ করেছেন ঢাকার পিজি হাসপাতালেও। সরকারি হাসপাতালের চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি যোগ দেন বেসরকারি ইউএসটিসি হাসপাতালে।

গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ডা. মোস্তফা কামাল নিজেকে নিয়োজিত করেন সেবাদানে। নতুন রোগ, ঢাকার বিশেষজ্ঞ ও বন্ধু চিকিৎসক-গবেষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে রোগীর সঠিক চিকিৎসাসেবা দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। অনলাইনে চিকিৎসাসেবায় সহযোগী হিসেবে নিয়েছেন নিজের ছেলে সদ্য পাশ করা ডাক্তার এসএম তাজওয়ার তাহির আলিফকেও। তার এক ছেলে ও এক মেয়ের দুজনেই চিকিৎসক।

এমন দরদী চিকিৎসকটিই গত জুনের শেষ দিকে করোনায় আক্রান্ত হন। গত ২৭ জুন রাতে জরুরিভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়া হয় ঢাকায়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের আইসিইউতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার (১২ জুলাই) শেষ নিঃশ্বাসটি ছেড়ে পৃথিবীর ওপারে চলে গেলেন এই ‘গরিবের ডাক্তার’।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!