খুলশীর সুপারশপ বাস্কেটও বন্ধ হল দামপাড়ার করোনাকাণ্ডে

চাকরিতে ছিলেন সেই বৃদ্ধের ছেলে

দামপাড়ার বাসিন্দার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তের ঘটনায় বন্ধ হল চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী জাকির হোসেন সড়কের সুপারশপ ‘বাস্কেট’। শনিবার (৪ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাস্কেট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে নগর পুলিশের বিশেষ শাখা। করোনাকাণ্ডে বাড়িঘর লকডাউনের বাইরে গিয়ে এই প্রথম কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হল চট্টগ্রামে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শুক্রবার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পজিটিভ আসে। তার ছেলে বাস্কেট সুপাশপের স্টাফদের সাথে কন্ট্যাক্টে (সংস্পর্শে) ছিলেন। বাস্কেট কর্তৃপক্ষ বলছে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ওই ছেলে তাদের প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। আমরা আপাতত বন্ধ রেখে পরিস্থিতি লক্ষ রাখছি বৃদ্ধের ছেলের টেস্ট রেজাল্ট কী আসে সেদিকে। তার রেজাল্ট যদি পজিটিভ আসে তবে সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইন মানতে হবে।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী জানান, ‘দামপাড়া অধিবাসী যে বৃদ্ধের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তার ছেলে বাস্কেটে চাকরি করতেন। আমরা সিটিএসবির পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেছি।’

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাস্কেটের ওই স্টাফের রক্তের নমুনা টেস্ট হবে। টেস্ট পজিটিভ হলে বাস্কেটের সবার ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হবে।

বাস্কেট কর্তৃপক্ষ বলছে ২৪ মার্চের কথা বললেও ওই সুপারশপের নিয়মিত এক ক্রেতা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘ওই বৃদ্ধের ছেলেকে আমি চিনি। তাকে ৩০ মার্চও আমি বাস্কেটে কাজ করতে দেখেছি।’

এ বিষয়ে বাস্কেট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে তাদের নিয়মিত নম্বরে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া আরও দুটি হটলাইনে ফোন করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় দামপাড়া নিবাসী এক বৃদ্ধের। তার মেয়ে এবং মেয়ের শাশুড়ি ১২ মার্চ সৌদিআরব থেকে ওমরা হজ পালন করে এসে দামাপাড়ায় ওই ব্যক্তির বাসায় ওঠেন। মেয়ের শাশুড়ি ঘন্টাদুয়েক দামপাড়া থেকে গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া চলে গেলেও মেয়ে থেকে যান বাপের বাসায়। কিন্তু হোম কোয়ারেন্টাইন না মেনে এই দুই বিদেশফেরত ঘুরে বেড়িয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাসা বাড়িতে, আত্মীয়-স্বজনও এসেছেন তাদের সংস্পর্শে।

এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই দামপাড়ায় ৬টি ভবন, সাতকানিয়ায় একটি, চন্দনাইশে একটি এবং শনিবার ডবলমুরিংয়ে একটি বাড়ি ও পটিয়ায় আরেকটি বাড়ি লকডাউন হয়। অন্যদিকে ন্যাশনাল হসপিটালের ২৩ জন চিকিৎসক ও স্টাফ হোম কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। এর মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় আকবরশাহ এলাকায় এক নার্সের বাসা লকডাউন করা হয়েছে।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!