খুললো না গেইট, হাসপাতালের সামনেই মারা গেলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী

শত আকুতিতেও মন গলেনি জেনারেল হাসপাতালের কারও

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এসেও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন একজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি। ভোররাতে হাসপাতালের গেইট খোলার জন্য বার বার অনুরোধ করার পরও গেইট খুলেননি কর্তৃপক্ষ। ফলে অক্সিজেনের অভাবে হাসপাতালে গেইটেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি- এমনটাই জানিয়েছে পরিবার।

শুক্রবার (২২ মে) ভোর ৫টায় এ ঘটনা ঘটে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হিমাশু কুমার দাশ(৬৮) সহকারি পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ছিলেন। তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অবসর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখান থেকে গত ৫ মাস আগে দেশে ফিরেন। কিন্তু ৩ মাস পর আবার চলে যাওয়ার কথা থাকলেও করোনার উদ্ভূদ পরিস্থিতির কারণে আর যাওয়া হয়নি। এর মধ্যে শুক্রবার (২২ মে) ভোররাতে হঠাৎ অসুস্থবোধ করায় জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু হাসপাতালের গেইট না খোলার কারণে বিনা চিকিৎসায় সেখানেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন হিমাশু কুমার দাশ।

এ বিষয়ে মৃত হিমাংশু কুমার দাশের মেয়ে এডভোকেট দিতি দাশ বলেন, রাতে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় জেনারেল হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন না। হার্টঅ্যাটাক করেছিলেন। কিন্তু তারা হাসপাতালের গেইট খুলেনি। হাসপাতালের অনেকের কাছে গেলাম ডাক্তার, নার্স কেউ আসেন নি। তখন আমরা ওখানেই পরিচিত এক ডাক্তারকে ফোন দিয়ে নিয়ে আসলে জানতে পারি উনি মারা গেছেন। চিকিৎসার অভাবে আমার বাবা মারা গেলেন। উনার ওই সময় অক্সিজেন দরকার ছিল। এরপর ওখান থেকে কাট্টলীর বাসায় নিয়ে আসি বাবাকে।

বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, তিনি জরুরি বিভাগের না গিয়ে সরাসরি উপরে আইসিওতে চলে এসেছিলেন। নিয়ম হলো জরুরি বিভাগের এন্টি করার পর প্রয়োজন হলে আইসিও বা অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। তারা উপরে আইসিওর সামনে দরজার ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। তখন জরুরি বিভাগের কল দেওয়া হয়। ওরা জানায় কোন রোগী পাঠানো হয়নি। তখন তাদের আবার জরুরি বিভাগের এন্টি বা চেক আপ করার জন্য পাঠানো হয়। ততক্ষণে তিনি মারা যান। তাছাড়া ভোরে আইসিও’র কোনও বেড খালি ছিল না।

তিনি বলেন, আসলে জেনারেল হাসপাতালে অনেকগুলো বিল্ডিং। রোগীরা আসলে বুঝতে পারে না কোথায় যাবে। এমন ঘটনা এর আগেও হয়েছে। নিদিষ্ট স্থান খুঁজতে খুঁজতেই রোগী মারা গিয়েছে। যতদিন এক বিল্ডিংয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম না হবে রোগীদের এমন ভোগান্তি একটু হবে।

তিনি আরও জানান, উনার করোনা পরীক্ষা করানো হয় নি। তবে আমেরিকার থেকে যদি ৫ মাস আগে এসে থাকে এতদিনে করোনা চলে যাওয়ার কথা। তাছাড়া করোনার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।।

আরএ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!