খালেদার ক্রমঅবনতিশীল স্বাস্থ্য পরিস্থিতি তুলে ধরলেন চট্টগ্রামের ড্যাব নেতারা

‘ধীরে ধীরে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন তিনি’

কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া চরম অসুস্থতায় ভুগছেন জানিয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। যথাযথ চিকিৎসা না দিলে তার এই অবস্থা স্থায়ী রূপ নিতে পারে। অথচ বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ সরকারের অশুভ ইশারায় খালেদা জিয়ার প্রাপ্য জামিন ভন্ডুল করতে সত্য গোপন করছেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে সরকার খালেদা জিয়ার জামিন প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্ত করছে।’

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর লাভলেইন এলাকার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড্যাব নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনের ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) শাখার সভাপতি ডা. জসিম উদ্দিন, জেলা শাখার সভাপতি ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি ডা. আব্বাস উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালির সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চমেক শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়েজুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘বেগম জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে বিএসএমএমইউ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন যা খুবই দুঃখজনক। বিএসএমএমই পরিচালক বলেছেন যে খালেদা জিয়ার অসহযোগিতার কারণেই তার সাথে চিকিৎসকরা দেখা করতে পারছেন না, যা সম্পুর্ণ মিথ্যা।’

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যখন নেত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ তখন ওনাকে ফিজিওথেরাপি দিতো সাবরিনা ইয়াসমিন নামের একজন প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক। আমি একজন ফিজিওথেরাপিস্ট হিসাবে ওনার জন্য উন্নত একটি ফিজিওথেরাপি মেশিন পাঠিয়েছিলাম। সেটা জানার পর ডা. সাবরিনা ইয়াসমিনকে চিকিৎসা থেকে বাদ দেয়া হয়। ওই জায়গায় তৃতীয় শ্রেণির একজন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এসব সরকারের নীল নকশার অংশ।’

ড্যাব নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘ইদানিং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার অপপ্রয়াসে তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসত্য সংবাদ পরিবেশ করা হচ্ছে যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

বক্তারা বলেন, ‘বেগম জিয়ার হাতে এবং পায়ে ছোট জয়েন্টগুলোসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে। এতে তিনি তীব্র ব্যাথা অনুভব করছেন। এসব বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা, ওঠাবসা এমনকি নিজ হাতে খাবারও খেতে পারছেন না। অথচ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে নিজ পায়ে হেঁটে জেলখানায় প্রবেশ করেন, নিজে হেঁটে দোতলায় তার নির্ধারিত রুমে যান, এমন কি জেলখানা থেকে এর আগের বার যখন বিএসএমএমইউতে আসেন তখন গাড়ি থেকে নেমে নিজে লিফট পর্যন্ত হেঁটে যান। সময়ের পরিক্রমায় তিনি কিভাবে আজকের অবস্থায় উপনীত হলেন সেটা প্রশ্ন রাখতে চাই। তিনি সুচিকিৎসা পেলে এই অবস্থা হতো না!

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ড্যাবের উপদেষ্টা আবুল কালাম, নগর বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এস এম সরোয়ার আলম, ড্যাব নগর সহ-সভাপতি ডা. কাজী মাহবুব আলম, ড্যাব নেতা ডা. ইফতেখার আদনান, ডা. নুরুল করিম চৌধুরী, ডা. খোরশেদ আলম, ডা. মিনহাজুল আলম, ডা. মইন উদ্দিন, ডা. ওমর ফারুক পারভেজ, ডা. জাহেদুল আলম, ডা. মীর কাশেম মজুমদার, ডা. ওয়াসিফ কামাল নাদিম, ডা. সাইফুল ইসলাম, ডা. সাদ্দাম, ডা. জাহেদ, মোহাম্মদুল হক জনি, সাইফুল ইসলাম আজিজ, নয়ন প্রমুখ।

এফএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!