খালি হাতে ধরে ‘বিদেশি পিস্তলসহ’ গ্রেপ্তার, চান্দগাঁওয়ের জুয়েলকে নিয়ে পুলিশের লুকোচুরি

নেপথ্যে বহদ্দারহাটের জাবেদ গ্রুপের হাত দেখছে পরিবার

হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ মাকে নিয়ে বাসায় ফেরার পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকার মো. জুয়েল।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও বুধবার দুপুর পর্যন্ত তাকে নিয়ে লুকোচুরি চলে চান্দগাঁও থানা পুলিশের। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এসে পুলিশ জানায়, জুয়েল ওরফে ধামা জুয়েলকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কিন্তু জুয়েলের পরিবারের দাবি, কোনো অস্ত্র তো নয়ই, মায়ের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাসায় আসার পর সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় পুলিশের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ১৪ ডিসেম্বর ৯টার দিকে চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের বাইতুশ শরফ জামে মসজিদের পূর্ব পাশে ছােট গলির ভিতর থেকে মো. জুয়েল ওরফে ধামা জুয়েলকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে গ্রেপ্তারের ৩০ মিনিট পর মঙ্গলবার রাত ৯টায় বিস্তারিত জানতে চান্দগাঁও থানার ওসিকে ফোন করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, এই নামে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পরে ১৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় ওসি জানান, জুয়েলের নামে দুটি মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে। দুটি মাদক মামলার পলাতক আসামিও জুয়েল। তার বিরুদ্ধে মোট আটটি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।

এদিকে পুলিশের এই লুকোচুরিকে ‘সাজানো নাটক’ বলে দাবি করেছেন গ্রেপ্তার হওয়া জুয়েলের মা রাবেয়া বেগম। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘আমি খুব অসুস্থ, কথা বললে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জুয়েল আমাকে নিয়ে মেডিকেল অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ বাসায় আসে।’

তিনি বলেন, ‘সেই সময় বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংলগ্ন চৌধুরী বাড়ি এলাকার নিজ বাসা থেকে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় চান্দগাঁও থানা পুলিশ। আমার ছেলের নামে কয়েকটা মামলা আছে। তাই বলে খালি হাতে গ্রেপ্তার করেও তাকে বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে পুলিশ— এটা অন্যায়।’

জুয়েলের মা আরও জানান, বহদ্দারহাটের আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জুয়েলের ভাই রাজুর সঙ্গে বিরোধ রয়েছে বহদ্দারহাটের কথিত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাবেদের। রাজু সম্প্রতি কারাগার থেকে বেরিয়ে এলে তার বিরুদ্ধে তৎপর হয়ে উঠে জাবেদ। কিন্তু রাজু মামলায় জামিনে থাকায় তাকে পুলিশ দিয়ে আটকাতে না পেরে জুয়েলকে আটকানো হয়। জুয়েলের বিরুদ্ধে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। এটিকে কাজে লাগানো হয় ফাঁদ হিসেবেই।

তিনি অভিযোগ করেন, মূলত চান্দঁগাও থানার ওসির সঙ্গে জাবেদের বিশেষ সখ্য রয়েছে। জাবেদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী নাম ভাঙিয়ে বহদ্দারহাটে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও রয়েছে।

কেএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!