ক্ষেতের উপর দিয়ে চলছে নৌকা, চন্দনাইশে পানিবন্দী হাজারো মানুষ

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সাঙ্গু নদীর বাঁধ উপচে চন্দনাইশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। এছাড়া বন্যার পানির কারণে কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, টানা সাতদিন প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাঙ্গু নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার দোহাজারী, ধোপাছড়ি, হাশিমপুর, সাতবাড়িয়াসহ আরও কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব ইউনিয়ানের বাসিন্দারা। এছাড়া চন্দনাইশের নয়া হাট, রাইজোআরা, কাটগর, জামিজুরি, বারুদখানা, চাগাচর, খাগরিয়া ভোরবাজার, বিওসি মোড়, মরফরা, লালটিয়া ও সাতবাড়িয়া বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
ক্ষেতের উপর দিয়ে চলছে নৌকা, চন্দনাইশে পানিবন্দী হাজারো মানুষ 1

দোহাজারী ইউনিয়নের চাগাচর এলাকার মো. জমির আলী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে আমরা পানিবন্দী হয়ে আছি। ঘরের মধ্যে কোমর সমান পানি। সবদিকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না। খাওয়া-দাওয়ারও সমস্যা হচ্ছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছে। কিন্তু নিজের ঘর ছেড়ে কষ্ট হচ্ছে তাই যায়নি। এ বন্যার কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।’

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দোহাজারী পৌরসভার প্রশাসক আ.ন.ম বদরুদ্দোজা। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে তিনি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন এবং পানিবন্দী মানুষদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন।

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কপাল পুড়েছে সাঙ্গু নদী তীরবর্তী চরের কৃষকদের। চন্দনাইশ-সাতকানিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী চরে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে উৎপাদিত হয় বর্ষাকালীন শাক-সব্জি।

কৃষকরা জানান, ধার-দেনা করে সব্জি চাষ করি। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষার মৌষুমে ক্ষেতগুলো প্লাবিত হয়ে যায়। এখন আমাদের ক্ষেতের উপর দিয়ে নৌকা চলছে। আমাদের কোটি টাকার সোনার ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমরা সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে গেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম বদরুদ্দোজা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে আমরা আছি। যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে চন্দনাইশ উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!