ক্রীড়াঙ্গনেও ডেঙ্গুর থাবা, হাসপাতালে বাড়ছে ক্রীড়াবিদদের ভিড়

ডেঙ্গুর আতঙ্কে সারাদেশ কাঁপছে, আতঙ্কে আছে ক্রীড়াঙ্গনও। সামনে সাউথ এশিয়ান গেমস। এর মধ্যেই ক্যাম্পে যোগ দেয়া ক্রীড়াবিদদের মধ্যে অনেকেই ডেঙ্গুর শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে এস এ গেমসের স্বপ্নটা হারিয়ে যেতে বসেছে অনেক ক্রীড়াবিদের। এ নিয়ে শঙ্কিত ক্রীড়াবিদসহ ফেডারেশনগুলো।

ডেঙ্গুর শিকার হয়েছেন খো খো, কাবাডি, ফুটবলসহ বেশ কয়েকটি ডিসিপ্লিনের অনেক অ্যাথলেটরা। যা নিয়ে ক্যাম্পে থাকা বাকি খেলোয়াড়দের মধ্যে ভয়াবহ আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন সংকটে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন।

ডেঙ্গুর শিকার হয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালের ভর্তি আছেন কাবাডি খেলোয়াড় মুসলিমা খাতুন। রাজধানীর আরও কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন বৃষ্টি, হাবিবা, সুমাইয়া ও আসমা। এদিকে ময়মনসিংহের দুই নারী ফুটবলারও ডেঙ্গুর শিকার হয়ে প্রথমে হাসপাতাল এরপর এখন বাসায় চিকিৎসাধীন।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে নেপালে অনুষ্ঠিত হবে এসএ গেমসের ১৩তম আসর। প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু হয়ে গেছে এ মাস থেকেই। নারী ক্রীড়াবিদরা আবাসিক ক্যাম্প করছেন ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে। সেখানেই খো খো-কাবাডির ততোধিক ক্রীড়াবিদ ডেঙ্গুর শিকার হয়েছেন।

খো খো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাবুল বলেন, ‘৭-৮ জনের শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ। এখন কেউ কেউ বলছে, আমরা যদি ক্যাম্প থেকে সবাইকে ছুটি দিয়ে দেই তাহলে তারা বাড়ি ফিরে গেলে তাদের দ্বারা ডেঙ্গু ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে।’

হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান স্বপন জানান, ‘আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি তাদের ভালোভাবে রাখার জন্য। কিন্তু মশাকে তো আমি বন্ধ করে রাখতে পারবো না।’

ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে চেষ্টার কমতি নেই এসএ গেমসের ক্যাম্পে থাকা খেলোয়াড়দের। অনুশীলনের বাইরে যতটা সম্ভব মশারির ভেতরেই কাটাচ্ছেন তারা। যদিও হ্যান্ডবল ফেডারেশনের এমন চিত্রের সঙ্গে মিল নেই বাকি ফেডারেশনগুলোর। অন্যদের জন্য নেই এমন সুযোগ-সুবিধা।

এসএ গেমসের ক্যাপে থাকা একজন নারী অ্যাথলেট বলেন, তিন-চারজন মেয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ক্যাম্প থেকে তাদের বাদ পড়তে হয়েছে। এখন যেহেতু ডেঙ্গুর একটা মৌসুম চলছে, তাই আমাদের যে হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আরেক নারী অ্যাথলেট বলেন, সবাই সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এরপরেও অনেকের জ্বর হচ্ছে। জ্বর হলেই মনে হচ্ছে এই মনে হয় ডেঙ্গু হয়ে গেল!

অ্যাথলেটদের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি উদ্বিগ্ন করছে এখন পর্যন্ত সুস্থ থাকা অ্যাথলেট এবং ফেডারেশন কর্তাদের। তাদের দাবি, শুধু সতর্কতা দিয়ে অ্যাথলেটদের ডেঙ্গু থেকে বাঁচানো কঠিন।

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শাহেদ রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, উত্তর এবং দক্ষিণের দুই মেয়রের সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে আলাপ করেছি। তাদেরকে আমরা চিঠি দিয়েছি। যে জায়গায় আমাদের আবাসিক ক্যাম্পগুলো হচ্ছে, সেখানে যাতে নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানো হয়, তার জন্য বলা হয়েছে। উনারা তা করছেনও। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্য আমরা আলাদাভাবে মশারিও দিয়েছি।

এদিকে ক্যাম্পে ডেঙ্গু মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। বিওএ’র সভাপতি এবং সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের নির্দেশনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১১টায় ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স এ ডেঙ্গু মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের পর এই কার্যক্রম মোহাম্মদপুর শারিরীক শিক্ষা কলেজে পরিচালিত হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!