মাশরাফির ‘মান’ যেখানে ক্যান্সারে বিপন্ন শত শিশুর জীবনের চেয়েও বড়ো!

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

হাতে হলুদ রঙের খেলনা নিয়ে শুয়ে আছে হাসপাতালের বিছানায়। গৌড় মুখখানিজুড়ে কেমন যেন অপূর্ণতার ছাপ। স্পষ্ট করে কথা বলতে জানে। কিছুক্ষণ পর পর মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে খুব ধীরে ধীরে বলে—’ও মা, আই বাড়ি য্যাইউম। দাদীর লগে খেলুম। কত্তে যাইউম?’ মা রেবা রানী আশ্বাস দিয়ে যায় বারবার—’এই তো বাবা আর কটা দিন পরেই আমরা চলে যাব।’ মিথ্যা আশ্বাস তো বটেই! শিশুটার ছোট্ট শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি, হাসপাতাল ছেড়ে যাবে কোথায়?

যে বয়স খেলার বয়স সে বয়সেই সাড়ে চার বছরের শুভংকর কর্মকারের শরীরে বেঁধেছে মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সার—চিকিৎসা-পরিভাষায় একিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া। তার সঙ্গে আবার পাল্লা দিয়ে বেঁধেছে আরেকটি রোগ ডায়াবেটিস। যে খেলনা নিয়ে বাড়ি মাতিয়ে রাখার কথা ছিল, সেই খেলনা নিয়েই হাসপাতালের বিছানায় দিনের পর দিন কাটছে শুভংকরের।

মাসদুয়েক আগে তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হয় সাড়ে চার বছরের শিশু শুভংকর কর্মকার। স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ১৬০০ টাকার ওষুধ কিনে খাওয়ানো হয় ৭ দিন। তারপরেও জ্বর না কমলে স্থানীয় এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিলে তিনি রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। রক্ত পরীক্ষা করানোর পাঁচদিন পর রিপোর্ট এলে সেই ডাক্তার চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। ১৩ দিন আগে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ১০ দিন রেডিওথেরাপি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার পর অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ৯ দিনের মাথায় মা-বাবা জানতে পারেন তাদের ছোট্ট ছেলে শুভংকরের ব্লাড ক্যান্সার!

ছেলের পাশে মা বসে থাকেন পাথর হয়ে
ফটিকছড়ির রামগড় চা বাগানে বাবা দীপক কর্মকার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চা পাতা তোলার কাজ করে আয় করেন মাত্র ১০২ টাকা। মা রেবা রানীও করতেন একই কাজ। কিন্তু ছেলের অসুস্থতায় সেই কাজও এখন বন্ধ। দিনরাত ছেলের পাশেই অনেকটা পাথরের মত বসে থাকেন। ব্লাড ক্যান্সারের পাশাপাশি ডায়াবেটিস থাকায় সবরকমের খাবার খেতে পারে না শিশু শুভংকর কর্মকার। দিনে দিনে গায়ের বর্ণ কালো হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। ছেলের চিন্তায় পাশের চোখের নিচে পড়েছে কালো দাগ। এই মা জানেন না তার ছেলে কতদিনে সুস্থ হয়ে আবার আগের মতো হেসেখেলে পুরো ঘর মাতিয়ে রাখবে। খেলনা কেনার জন্য বায়না ধরবে বাবার কাছে। দিশেহারা মা চোখের পানি ফেলে কেবল বলেন, ‌’আমার ছেলেটা যেন ভালো হয়ে যায়। আমার আর কিছুই চাই না। কিন্তু ছেলেকে সুস্থ করার টাকাও নাই আমার কাছে। ডাক্তার বলছে, এই রোগের চিকিৎসায় অনেক টাকা লাগে। আমি এখন এতো টাকা কই পাবো? কে দেবে? আমার তো ঢাল-কূল নেই।’ হতাশায় তিনি তাকিয়ে থাকেন অন্যদিকে, হাসপাতালের পুরনো জানালার ফাঁক গলে দৃষ্টি তার আকাশের সীমানায়।

ফারদিনের ৭ নম্বর কেমোথেরাপি
শুভংকরের মতই আরেক শিশু মো. ফারদিন। মাত্র ১১ মাস বয়সেই টিউমার ক্যান্সার ধরা পড়ে তার শরীরে। এ বছরের এপ্রিলে বাবা-মা জানতে পারে তাদের ছোট্ট মানিকের ক্যান্সার! অনেকদিন জ্বর, পেটফাঁপা সমস্যা নিয়ে সন্দ্বীপের মগধরা থেকে বাবা-মা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ডাক্তার জানান তার ক্যান্সার। কয়েকদিন পরপরই দিতে হয় কেমোথেরাপি। ২৫টি কেমোথেরাপির মধ্যে এখন ৭ নম্বর কেমো চলছে। অবুঝ শিশুটি জানেই না তার কী হয়েছে! অসহনীয় ব্যথা নিয়ে সারাক্ষণ হাসপাতালের বিছানায় কেবল চিৎকার করে মায়ের কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মা ছেলে সুস্থ হবার আশায় দিন গুণতে থাকেন।

শরীর নয়, যেন কাঠ
নাজমুস ইসলাম সায়মনের বয়স ৪ বছর ৫ মাস। পুরো মুখজুড়ে ক্ষত। চোখ দুটোও ভালো করে দেখা যায় না। হাত-পা সরু চিকন হয়ে শরীর যেন কাষ্ঠে পরিণত হয়েছে। নাকের মধ্য দিয়ে পাইপ। বয়স যখন ২ বছর ছিল তখনই ধরা পড়ে তার ব্লাড ক্যান্সার। মা আমেনা বেগম ডলি প্রায় ২ বছর ৪ মাস ধরে চিকিৎসা করাচ্ছেন। দিনমজুর বাবা ছেলেকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টাই করে যাচ্ছেন।

বছরচারেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল চট্টগ্রামে এসেই ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় কাটানোর প্রস্তাব দেয়। তাতে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ শিশুরোগীকে নিয়ে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হাজির হয়ে যান ডা. রেজাউল করিম।
বছরচারেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল চট্টগ্রামে এসেই ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় কাটানোর প্রস্তাব দেয়। তাতে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ শিশুরোগীকে নিয়ে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হাজির হয়ে যান ডা. রেজাউল করিম।

জীবন-মৃত্যুর প্রহর গোণে যে শিশুরা
এ এক অসম যুদ্ধ। এর মাঝেই জীবন-মৃত্যুর প্রহর গুণছে এইসব শিশু। ক্যান্সারের চিকিৎসা এমনিতেই ব্যয়বহুল, একইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদীও। ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। যে কোনো মুহূর্তে একজন রোগী জীবনশঙ্কায় পড়ে যেতে পারে। এর মাঝেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সারে ভোগা শিশুদের জীবনে নেমে এসেছে দারুণ এক দুঃসংবাদ—পুরো বিভাগের একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকটিকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়, যেখানে ক্যান্সারের চিকিৎসা তো দূরের, সাধারণ চিকিৎসাই অনেকটা অপ্রতুল।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ১১ শিশু রোগীর ৯ জনই ব্লাড ক্যান্সারে (একিউট লিম্ফব্লাস্টিক লিউকেমিয়া) আক্রান্ত। ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের মাঝে শতকরা ৩০ জনই ব্লাড ক্যান্সারে (একিউট লিম্ফব্লাস্টিক লিউকেমিয়া) ভোগে। দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা হওয়ায় কেউ কেউ চিকিৎসা মাঝপথে থামিয়ে দেয়। চট্টগ্রামের প্রায় ছয় শতাধিক শিশু ক্যান্সার ও জীবনঘাতি রক্তরোগে আক্রান্ত হয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একেএম রেজাউল করিমের অধীনে এই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাংলাদেশে পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিষয়ে মাত্র তিন জন অধ্যাপক চাকরিরত আছেন, তাদের মধ্যে একেএম রেজাউল করিম একজন। মূলত তার হাত ধরেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগটি বিকশিত হয়। ঢাকার বাইরে সারা দেশে একমাত্র চট্টগ্রামেই রয়েছে এ বিভাগ।

মাশরাফির ‘সম্মান’ যেখানে জীবনের চেয়েও বড়ো!
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টে ক্রিকেটার মাশরাফি ইস্যুতে একটি মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে অধ্যাপক একেএম রেজাউল করিমকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়। অথচ সেখানে পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগ নামে কোন বিভাগই নেই। চট্টগ্রামে বর্তমানে শতাধিক শিশু ক্যান্সার রোগী রেজাউল করিমের অধীনে চিকিৎসাধীন আছে, তার এই অর্থহীন বদলির কারণে এইসব শিশুর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত এইসব শিশুর পরিবার নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের। এদের সামর্থ্য নেই দেশের বাইরে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করার। অনেকের ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোরও সাধ্য নেই।

ক্যান্সার আক্রান্ত এক শিশুর অভিভাবক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রেজাউল করিম স্যার বদলি হয়ে গেলে কোথায় যাবো আমরা?’ আরেক অভিভাবক বলেন, ‘অসহায় শিশুদের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও স্যারকে রাখার ব্যবস্থা করুন।’

গত ২৬ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আদেশে অধ্যাপক একেএম রেজাউল করিমকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে সংযুক্ত করে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পার-১ অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।

আলোচনা বিশ্ব গণমাধ্যমেও
ক্রিকেটার মাশরাফির সমালোচনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বদলি করে দেওয়ার এই ঘটনা আলোচিত হয়েছে বিশ্ব গণমাধ্যমেও। এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ও ব্রিটেনের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান, ভারতের দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও সৌদি আরবের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম আরব নিউজসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম। এএফপির খবরে উল্লেখ করা হয়, বদলি হওয়া চিকিৎসক রেজাউল করিম একজন শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ। ফেসবুকে মাশরাফির সমালোচনার কয়েক সপ্তাহ পরে তাকে রাঙামাটিতে বদলি করা হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি ওই চিকিৎসকের বক্তব্যও নেয়। এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ডা. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে ক্যান্সার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। এটা আমার কাছে এক ধরনের অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে মনে হয়েছে।’

এতোগুলো শিশু কোথায় যাবে?
চমেক হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সেবা দিতে ব্যস্ত কয়েকজন নার্স। যখন যে শিশুর যা (ওষুধ) প্রয়োজন তা ঠিক সময়েই দিতে ব্যস্ত তারা। ডাক্তার রেজাউল করিমের বদলি প্রসঙ্গে নার্স ইয়াসমিন সুলতানা রুনা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কী বলেন, সমস্যা হবে না! অনেক বড় সমস্যা হবে। স্যার না থাকলে এ বাচ্চাদের যে কী হবে! এমন ডাক্তার আর একজনও নাই এখানে।’

নার্স ইয়াসমিন সুলতানা আরও জানান, ‘মেডিকেল থেকে এ বিভাগের রোগীদের দেখাশোনার জন্য কোনো নার্স দেওয়া হয়নি। স্যার (ডা. রেজাউল করিম) নিজেই আমরা ৬ জন নার্স এবং একজন মাসিকে রেখেছেন। যখন কোনো রোগী ফলোআপে আসেন তাদের গাড়ি ভাড়া না থাকলে তিনি দিয়ে দেন। আজকেও আমার সামনে দুজন অভিভাবককে ৫০০ করে ১০০০ টাকা দিয়েছেন। যখন যেভাবে সম্ভব স্যার রোগীদের সাহায্য করেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তার বলেন, ‘আসলে উনি মাশরাফিকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা সত্যিই দুঃখজনক। তার জন্য শাস্তি পাওয়া প্রয়োজন, কিন্তু তাই বলে এভাবে নয়। এতোগুলো বাচ্চার জীবন জড়িত। উনি না থাকলে হয়তো অনেক বাচ্চা মারাও যেতে পারে। কেননা এটা দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা, আসা-যাওয়ার মাঝেই থাকা লাগে।’

এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেলের মতো মেডিকেল বন্ধ হয়ে গেলে সরকারের কিছুই যায় আসে না। যদি ৫০০ মানুষও মরে তাতে সরকারের কী? তাছাড়া মন্ত্রণালয়ের সবাই নন-মেডিকেল পারসন। তারা তো আসলে কোথায় কার প্রয়োজন তা বুঝবে না।’

এ প্রসঙ্গে ডা. একেএম রেজাউল করিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি তো সরকারি চাকরি করি। সরকার যেখানে দেয় সেখানেই যেতে হবে। সরকারের আদেশ মানার জন্য তৈরি হচ্ছি।’

শিশুদের চিকিৎসা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ওদের চিকিৎসা বিঘ্নিত হবে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে হয়তো অনেকেই মারা যেতে পারে। কিন্তু আমি চাই না ওদের ক্ষতি হোক।’

রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত কিছু শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা।
রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত কিছু শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা।

অভিভাবকদের মানববন্ধন: ‘ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের বাঁচতে দিন’

ডা. রেজাউল করিমের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত কিছু শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে জড়ো হয়েছিলেন তারা। এর ব্যানারে লেখা ছিল—‘ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের বাঁচতে দিন। ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা নিয়ে ছিনিমিনি বন্ধ করুন। শত শত গরিব শিশু ক্যান্সার রোগীদের বাঁচাতে অধ্যাপক রেজাউল করিম স্যারের বদলি আদেশ বাতিল করতে হবে।’

ডা. একেএম রেজাউল করিমের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনে এসেছিলেন ক্যান্সারাক্রান্ত শিশু ও অভিভাবক মিলিয়ে প্রায় ৬০ জন। ৯ বছরের শিশু সরওয়ারকে নিয়ে মিরসরাই থেকে আসা সেলিনা বেগম মানববন্ধনে বলেন, ‘এক ছেলে ও এক মেয়ে আমার। ছেলেটি দুই বছর ধরে অসুস্থ। গরিব মানুষ। স্বামী গাড়ি চালায়। রেজাউল করিম স্যার না থাকলে এতদিন চিকিৎসা পেতাম না। তাঁকে চট্টগ্রামে রেখে দেওয়ার অনুরোধ করছি।’

ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ১১ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে উপস্থিত হওয়া হোটেল শ্রমিক নেজাম উদ্দিন মানববন্ধনে বলেন, ‘আজ আড়াই বছর ধরে আমার ছেলেটি অসুস্থ। কেমো দিতে হয়। এত টাকা কোথায় পাব? সরকারি হাসপাতালে করিম স্যার সব ব্যবস্থা করে দেন। উনি চলে গেলে আমার ছেলের কী হবে?’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!