কোভিড-১৯ এর জিন ও উৎপত্তিগত বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন কেউ। কেউ উদ্ভাবন করেছেন ভাইরাসটির অবস্থান ও প্রকোপ নির্ণয়ে ট্র্যাকার অ্যাপস। দেশ ও দেশের সংস্কৃতিকে কিভাবে প্রভাবিত করছে কোভিড-১৯- তা নিয়ে গবেষণায় নেমেছেন কেউ। আবার কেউ নেমেছেন করোনাভাইরাস ইস্যুতে জনসাধারনের সচেতনতার প্রকৃতি ও তা কার্যকর করার পদ্ধতি উদ্ভাবনে।
শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে দুটি গবেষণা প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। এ দুটি গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হওয়ারও অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করোনাভাইরাস ইস্যুতে এভাবেই গবেষণায় যুক্ত হয়েছেন।
পাশাপাশি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) করোনা সনাক্তকরন দলের সাথে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ নিয়ে গবেষনায় নিয়োজিত আছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একদল গবেষক। এই দুর্যোগ মুহুর্তে রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কয়েকটি গবেষনা প্রকল্পে কাজ করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল কোভিড-১৯ নিয়ে জনসাধারনের সচেতনতার প্রকৃতি ও সচেতনতা কার্যকর করতে বিভিন্ন পদ্ধতি উদ্ভাবন সংক্রান্ত গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
কোভিড-১৯ এর জিনগত গঠনে বিভিন্ন রোগীর মধ্যে ভিন্নতা, বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী প্রোটিনের বিভিন্ন গঠন ও ভাইরাসটির উৎপত্তিগত বিশ্লেষণ বিষয়ে গবেষণা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ড. আদনান মান্নান।
বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিভিন্ন দেশে ও দেশের সংস্কৃতিতে মানুষকে কিভাবে প্রভাবিত করছে- তা নিয়ে বাংলাদেশে সহযোগী হিসেবে আন্তর্জাতিক গবেষনায় কাজ করছেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের অলি আহমেদ পলাশ।
কোভিড-১৯ এর অবস্থান ও বিভিন্ন এলাকায় তার প্রকোপ নির্নয়ে কভিড ট্র্যাকার এপস উদ্ভাবন করেছেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডঃ আরিফ ইফতেখার মাহমুদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষনাকর্ম থেকে ইতোমধ্যে দুটি গবেষণা প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। যেগুলো শীঘ্রই আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হবে বলে আশা করছেন গবেষকরা।
এছাড়াও ড. আরিফ ইখতেখার মাহমুদ এবং ড. আদনান মান্নান বাংলাদেশ সরকারের পিপিই (স্বাস্থ্যসুরক্ষা পোষাক উদ্ভাবন এর মান নির্নয়) প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে সহায়তা করছেন। বিআইটিআইডিতে করোনা সনাক্তকরন দলের সাথে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর গবেষক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সরকারের কোভিড-১৯ ডায়াগনস্টিক দলের সাথে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের আরটি-পিসিআর প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত গবেষণা শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্যে আছেন- আসমা সালাউদ্দিন, মোহাম্মদ ইমরান হোসেন, রক্তিম বড়ুয়া ও সৈয়দ লোকমান।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস ইস্যুতে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রকল্প এ মুহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের গবেষকরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে এসে এই পরিস্থিতির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক কিছু গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করছেন। আমি এবং প্রক্টর মহোদয় এগুলো মনিটরিং করছি।’
এমআইটি/এমএফও