কোভিড অ্যানসিফেলোপ্যাথিতে আক্রান্ত হয়েই মারা গেলেন চমেক চিকিৎসক হাসান মুরাদ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরটি-পিসিআর ল্যাবে (করোনা পরীক্ষাগার) কর্মরত ডা. হাসান মুরাদ মারা (৪৬) গেছেন। রোববার (২০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত চারটার দিকে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি চমেকের ৩৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ডা. হাসান মুরাদ সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মওলা পাড়ার নুরু মাস্টার বাড়ির আবদুল মোনাফের সন্তান।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরটি-পিসিআর ল্যাবে কাজ করতে গিয়ে কোভিড আক্রান্ত হন তিনি। প্রথমে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও কোভিড জীবাণু তাঁর মস্তিষ্কের কোষে বাসা বাঁধে। ফলে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তিনিই চট্টগ্রামে কোভিড অ্যানসিফেলোপ্যাথি রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী প্রথম রোগী।

পার্কভিউ হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার তালুকদার জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, করোনা পজিটিভ নিয়েই ডা. হাসান মুরাদ পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি ভর্তি হওয়ার একদিন পর তাঁর স্ত্রীও করোনা পজিটিভ নিয়ে ভর্তি হন। কিন্তু চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান তাঁর স্ত্রী। ভর্তির পর থেকেই ডা. হাসান মুরাদের অক্সিজেনের মাত্রা খুব কম ছিল। হাইফ্লো নজল ক্যানোলা দিয়ে তার অক্সিজেন মাত্রা ঠিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল। ভর্তির ৪ থেকে ৫ দিনের মাথায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

তিনি আরও জানান, পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন ডা. হাসান মুরাদের বড় কোনো অসুখ ছিল না। আইসিইউতে প্রতিদিন তাকে ১২ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া হত। রোববার দুপুরের পর থেকে অক্সিজেনের মাত্রা আরও কমে যায়। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। রোববার দিবাগত রাত চারটার দিকে মারা যান হাসান মুরাদ।

অন্য কোনো রোগ না থাকলেও ডা. হাসান মুরাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ছিল জানিয়ে
পার্কভিউ হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার তালুকদার জিয়াউর রহমান জানান, এ কারণে করোনা আক্রান্ত হওয়ার অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করে তাঁর শরীরে।

এ বিষয়ে স্বাধীন্তা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আমম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘ডা. হাসান মুরাদ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি কোভিড সনাক্তের জন্য স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাবে শুরু থেকে কাজ করে আসছিলেন। সেখানে তিনি কোভিড আক্রান্ত হন। প্রথমে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও কোভিড জীবাণু তাঁর মস্তিষ্কের কোষে বাসা বাঁধে। ফলে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তিনিই চট্টগ্রামে কোভিড অ্যানসিফেলোপ্যাথি রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতুবরণকারী প্রথম রোগী।’

আইএমই/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!