ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার কোপা আমেরিকা দিয়ে কষ্ট ভুলার স্বপ্ন

কোপা আমেরিকার শুরু ১৫ জুন, ফাইনাল ৮ জুলাই

শনিবার (১৫ জুন) বাংলাদশে সময় ভোর সাড়ে ছয়টায় ব্রাজিল-বলিভিয়া ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে কোপা আমেরিকা-২০১৯’র আসর। লাতিন আমেরিকার ১০টি দেশ ছাড়াও এশিয়ার দুটি অতিথি দল অংশ নিচ্ছে এবারের আসরে। তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে ১২টি দল। তিন গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। বাকি দুটি জায়গা পূরণ করবে গ্রুপ পর্বে তৃতীয় হওয়া দলগুলোর মধ্যে পয়েন্ট বা গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা দুটি দল।
গ্রুপ এ-তে রয়েছে ব্রাজিল, বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা ও পেরু। গ্রুপ বি-তে রয়েছে আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, প্যারাগুয়ে ও কাতার এবং গ্রুপ সি-তে রয়েছে রয়েছে চিলি, ইকুয়েডর, জাপান ও উরুগুয়ে।

ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও এবারের টুর্নামেন্টে একবিন্দুতে দাঁড়িয়ে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ২০১৪ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে যে দুঃস্বপ্নের শিকার হয়েছিল ব্রাজিল, নিজেদের মাটিতে কোপা জিতে সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে চায় সেলেসাওরা। আর ওই বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠে ব্রাজিলের মাটি থেকে বিশ্বকাপ না নিয়ে আসার কষ্ট এখনো মেসিদের মনে। মেসিদের প্রথম ম্যাচ ১৬ জুন বাংলাদেশ সময় ভোর ৪ টার সময়, প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া।

ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে দুঃখের অধ্যায় ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া। তাছাড়া রাশিয়া বিশ্বকাপে কোয়ার্টার থেকে বিদায় নেয় ব্রাজিল। আর আর্জেন্টিনা তো আরও একধাপ আগেই (শেষ ১৬) বিদায় নেয়। সেইসঙ্গে পরপর দুইবার কোপার ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গের স্মৃতি তো মেসিদের আছেই। সবমিলিয়ে দুঃস্মৃতি মুছে ফেলার মিশন উভয় দলের।

কোপার আরেক সুপরিচিত দল চিলিকে টানা তৃতীয় শিরোপা জিততে হলে অনেক ভালো করতে হবে। তবে চিলিকে ছাপিয়ে ফেভারিট তালিকায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাই।

আর্জেন্টিনা এবং নিজের অপেক্ষা ঘোচাতে পারবেন মেসি?
আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্যের অভাব মেসির সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হওয়া বিতর্কে প্রতিনিয়ত লাঠি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে মেসি এবার সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চান। সম্প্রতি ফক্স-স্পোর্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সঙ্গে কিছু একটা জিতেই ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। অন্তত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাই করার চেষ্টা করব।’
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার কোপা আমেরিকা দিয়ে কষ্ট ভুলার স্বপ্ন 1
মেসি চেষ্টা করেননি, এই অপবাদ তাকে দেয়া যাবে না। দলকে বিশ্বকাপসহ তিনটি বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে তুলেছেন। ব্রাজিল বিশ্বকাপের পর টানা দুইবার কোপায়। কিন্তু কোপায় দুবারই চিলির কাছে পেনাল্টিতে হেরেছে আর্জেন্টিনা। ১৯৯৩ সালের পর আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতেনি। ৩২ বছরের মেসি এবার নিজের এবং দলের জন্য আন্তর্জাতিক সাফল্য নিয়ে আসতে চান।

পোস্টারবয় ছাড়া ব্রাজিল
স্বাগতিক এবং ফেভারিট ব্রাজিল কোপায় নামছে তাদের পোস্টারবয় নেইমারকে ছাড়াই। ইনজুরির কারণে খেলা হচ্ছে না পিএসজি তারকার। তা সত্ত্বেও, এই ধরনের পরিস্থিতিতে অন্যদের প্রমাণ করার দরজা খুলে দেয় এবং রিসার্লিসন, এভারটন এবং ডেভিড নেরেসসহ কোচ টিটের কাছে এমন প্রচুর বিকল্প রয়েছে। তবে ঘরের মাঠে আরেকবার ব্যর্থ হলে নেইমারের ইনজুরিকে অজুহাত হিসেবে তুলে ধরা কঠিন হবে ব্রাজিলের জন্য। নেইমার না থাকায় দলে সাফল্য আনার ক্ষেত্রে চাপ বাড়বে ফিলিপে কৌতিনহোর ওপর।

শিরোপাধারী চিলির প্রত্যাশা কম
কোপা আমেরিকার সাম্প্রতিক সাফল্য সত্ত্বেও, ব্যাক টু ব্যাক চ্যাম্পিয়ন চিলি উল্লেখযোগ্যভাবে কম চাপের মধ্যে থাকবে। তবে কোচ রেইনল্ডো রুদার দলের ১১ জন খেলোয়াড়ের বয়সই ৩০ বা তার চেয়ে বেশি। যদিও প্রচুর অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে।

কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, সাম্প্রতিক সময়ে চিলি তেমন কোনো তরুণ প্রতিভা দলে পায়নি। তরুণদের মধ্যে একমাত্র ভরসা ২৪ বছরের ডিফেন্ডার পাওলো ডায়াজ।

আগের দুই আসরে চিলিকে দুর্দান্ত দলে পরিণত করেছিলেন আর্তুরো ভিদাল ও অ্যালেক্সিস সানচেজরা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে একটা বাজে মৌসুম কাটানো সানচেজ থাকলেও অবসর নিয়ে ফেলেছেন ভিদাল।

আসর লুট করতে পারে আমন্ত্রিত দেশগুলো!
কনমেবল নিয়ম অনুসারে অতিথি দেশগুলোকে তাদের শোপিস টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার বাইরে দেশগুলো অংশ নেবে।

কোপায় এবার আমন্ত্রিত দেশ জাপান ও কাতার। এর আগে ১৯৯৯তে কোপায় অংশ নিয়েছিল জাপান। আর এবার প্রথম এই আমন্ত্রণ পেয়েছে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার। সি এবং বি গ্রুপে খেলতে যাওয়া এই দুদল লাতিন সমর্থকদের হতাশ করতে পারে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!