কোটিপতি থেকে শূন্য/ মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে!

ফটিকছড়ির ইসকান্দার মির্জা, নগরে একজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার। পৈত্রিক সূত্রে প্রচুর সম্পত্তির মালিক। কিন্তু মরণনেশা ইয়াবা তাকে এখন পথে বসিয়েছে। প্রায় একযুগ তিনি ইয়াবা আসক্ত। হিসাব থেকে নাই হয়ে গেছে এক এক করে প্রায় চার কোটি টাকা। অর্ধহারে, অনাহারে কেটেছে তার জীবন। কখনো আধা কেজি চাউল নিয়ে ঘরে ফিরেছেন বউ বাচ্চার জন্য। সাদা ভাতে লবণ মিশিয়ে সঙ্গে পেঁয়াজ দিয়ে মিটিয়েছেন ক্ষুধার জ্বালা! বেড়ে ওঠা সন্তানদের দিকে তাকিয়ে সুযোগ নিলেন মরণনেশা ইয়াবা ছাড়ার। এভাবে একেকটি নির্মম গল্প রয়েছে মো. ইছহাক, মো. শামসু, মো. শাহজাহান, আব্দুল মাবুদ, আবু বক্করের জীবনে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার (১৭ মে) নগরীর পূর্ব বাকলিয়ার মদনী মসজিদে জুম্মার নামাজের আগে মসজিদে সমবেত প্রায় দুই হাজার মুসল্লীর সামনে তারা মাদক ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রথমে কথা ছিল দুই মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করবেন। পরে তাদের সাথে যুক্ত হলেন আরও দুই জন। জুমার নামাজের আগে চারজনকেই মসজিদে মাদক ছাড়ার শপথবাক্য পাঠ করালেন বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন। তাদের শপথবাক্য পাঠ করানো শেষে ওসি নেজাম ঘোষণা দিলেন, আমার কাছে তালিকা আছে। এখানে যারা উপস্থিত আছেন কেউ স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে মাদক ছাড়তে চাইলে তাকে অভিনন্দন জানাবো। আর এ কথা শুনেই নামাজ শেষে এগিয়ে এলেন আরও তিন মাদক কারবারি।

এক প্রশ্নের জবাবে বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, গত ১৫ দিনে ৬৪টি মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পাশাপাশি ৮৪ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছে। থানার ৩৮টি মসজিদে জুমার নামাজের সময় খতিবদের মাধ্যমে আত্মসমর্পণের আহ্বান পৌঁছানো হয়েছে। যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তাদের আইনি ও আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।
ওসি নেজামের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান বলেন, মসজিদে আত্মসমর্পণ একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এতে অন্যরাও অনুপ্রাণীত হবে। সমাজে একটা সুন্দর পরিবেশ ফিরবে। নেশার খারাপ প্রভাব, পরিণতি থেকে সমাজ মুক্ত হবে।

আত্মসমর্পণের সময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ, বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মঈনুল ইসলামসহ মসজিদ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি, মহল্লা কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!