কেরোসিন ঢেলে গৃহবধূর আত্মহত্যা, শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় না পাওয়ার ক্ষোভ

শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় না পেয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ধুম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুম গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহতের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহতের নাম রুপনা দাস। তিনি উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের মলিয়াইশ গ্রামের নিরঞ্জন দাসের মেয়ে।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ভোর ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান রুপনা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে প্রেম করে বিয়েতে আবদ্ধ হন রুপনা দাস ও ধুম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধূম গ্রামের রাখাল কুমার দে’র ছেলে রুপম কুমার দে। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন রুপনাকে গৃহবধূ হিসেবে মেনে নিচ্ছিল না। তবে স্বামী রুপমের সঙ্গে মিরসরাই সদরে একটি বাসা ভাড়ায় থাকতেন রুপনা।

সম্প্রতি রুপনা ও রুপমের মধ্যে বিবাদ হয়। এরপর রুপনাকে ছেড়ে চলে যান রুপম। পরে রুপনা তার দুই বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে একাধিকবার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে নিজের অধিকার চান। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে আশ্রয় দেয়নি।

গত সোমবার (১৮ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে কন্যা সন্তানকে নিয়ে আবারও শ্বশুরবাড়ি যান রুপনা। কিন্তু তাকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।

পরে স্থানীয়রা তাকে দ্বগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহত রুপনা দাসের বড় বোন বিউটি দাস বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ রুপনার স্বামী রুপম কুমার দে, শ্বশুর রাখাল কুমার দে, শাশুড়ি বেলা রানি দে, ভাসুর কাঞ্চন কুমার দে ও জা উর্মি দে’কে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার বিকালে গৃহবধূ রুপনা দাস গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে মারা যান।

এ ঘটনায় রুপনা দাসের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রীকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!