কুমিল্লার নুসরাত ফারিয়া যেভাবে চট্টগ্রামের বউ

চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়ার বাড়ি কুমিল্লা। আর যার সঙ্গে জীবনের গাঁটছড়া বাঁধলেন সেই হবু বর রনি রিয়াদ রশীদের বাড়ি চট্টগ্রামে। আরও খোলাসা করে বললে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট গ্রামে। রনির বাবা সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ বীরপ্রতীক।

গত পয়লা মার্চ দীর্ঘদিনের এই প্রেমিকের সঙ্গে আংটি বদল করেছেন নুসরাত ফারিয়া। তবে খবরটি প্রকাশ করেছেন সোমবার (৮ জুন)। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে ফারিয়া জানান, বাগদানের মধ্য দিয়ে তাদের সাত বছরের প্রেমের সম্পর্ক পূর্ণতা পাচ্ছে।

চট্টগ্রামের ছেলের হাত থেকেই কিভাবে আংটি পরলেন— এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত বললেন ‘আশিকী’কন্যা নুসরাত ফারিয়া। বললেন, ‘রনি আর্মি পরিবারের সন্তান। আমিও। তার বাবা সাবেক সেনাপ্রধান বীরপ্রতীক এম হারুন-অর-রশীদ। আমাদের দুজনের বেড়ে ওঠা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়।’

তবে রনি রিয়াদ রশীদের প্রথম পরিচয়টা হয়েছিল ২০১৪ সালের ২১ মার্চ। নুসরাত ফারিয়া বললেন, ‘তখন তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে এসেছেন। আমাদের দু’জনের কমন এক বন্ধুর মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয়। প্রথম দেখায় আমরা পড়াশোনা, কাজ, লাইফস্টাইল— এগুলো নিয়েই কথা বলেছি। উনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন তখন। সেই বিষয়গুলোও আমাদের আলাপচারিতায় উঠে আসে। এরপর আর তেমনভাবে আমাদের দেখা হয়নি। একদিন আমার সেই বন্ধু বললো, উনি আমার সম্পর্কে ওকে জিজ্ঞেস করেছিল! আমি বললাম, ও আচ্ছা, ঠিক আছে। কোনও অসুবিধে নেই। এর অনেকদিন পর আবারও উনার সঙ্গে আমার দেখা ও কথা হয়।’

সেই পরিচয়ের দু এক মাস পর রনিই প্রথম ফারিয়াকে বন্ধু হওয়ার প্রস্তাব দেন। এরপর থেকে দুজনের নিয়মিত যোগাযোগ হতে থাকে। তবে দুজনেই তখন নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়েও ভীষণ ব্যস্ত। ব্যস্ততা যতোই থাকুক, রনি সবসময়েই সচেতন ছিলেন ফারিয়ার নানান বিষয়ে।

নুসরাত ফারিয়া বলেন, ‘এমনও হয়েছে তিনি কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন, আমি ফোন দিয়েছি, তিনি তা রিসিভ করতেন। উল্টোদিকে আমি সেটা করতে পারিনি। তার সঙ্গে যখন আমার পরিচয় তখন আমি উপস্থাপনা করি। আমার নায়িকা হয়ে ওঠার পেছনে তার অনেক ভূমিকা ও অনুপ্রেরণা আছে। হয়তো তার কারণেই আমি নায়িকা হতে পেরেছি। এভাবেই তার প্রতি আমার ভালোলাগা বাড়তে থাকে। তবে পরিচয়ের এক বছর পর ভালোবাসার প্রস্তাবটা তার পক্ষ থেকেই আসে। কথা বলার সুবাদে আমরা ভালো বন্ধু বনে যাই, এরপর ভালোবাসা। আমার হাতে একটা ডায়মন্ডের আংটি আছে, যা আমি অনেক আগে থেকেই পরি। উনি ডায়মন্ডের আংটি দিয়ে আমাকে প্রপোজ করেন। উনার প্রপোজের ভাষাগুলো আমার মনে ধরেছিল। সেটা আজ আর না বলি। আমার প্রতি তার ভালো লাগাটা অনেক বেশি। সে আমাকে অনেক বোঝে। শত ব্যস্ততার মাঝেও উনি আমাকে সময় দেন। আমার যে কোনও সমস্যা বা পরামর্শে, সবার আগে আমি উনার সাপোর্ট পাই। বাবা-মা তো আছেই, পাশাপাশি উনিও অভিভাবক হিসেবে পাশে থেকেছেন গেল ছটি বছর।’

তিনি বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৯ ছিল, তখন থেকে এখন পর্যন্ত রনির যে সাপোর্ট আমি পেয়েছি বা পাচ্ছি, তা বলার নয়। সিনেমাতে আসার পেছনে যে দুজন মানুষ বড় ভূমিকা রেখেছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রনি।’

চট্টগ্রামের ছেলে রনি রিয়াদ রশীদ, তবে তার জন্ম ঢাকায়। বাবা হারুন-অর-রশীদ যখন সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, রনির শৈশবের সেই কয়েক বছর কেটেছে সৌদি আরবের রিয়াদে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ইনফরমেশন সিস্টেম বিষয়ে স্নাতক ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

পড়াশোনা শেষ করে ২০০৮ সালে দেশে ফিরে তিনি এক্সনমবিল করপোরেশনের অর্থ ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। পরে গ্রামীণফোন আইটির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ও সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেডের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তিনি একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াতে সরকারি চাকরি করছেন। এছাড়া পারিবারিক ব্যবসাও দেখাশোনা করেন।

রনি রিয়াদ রশীদ যেহেতু অস্ট্রেলিয়াতে সরকারি চাকরি করছেন, নুসরাত ফারিয়াও কি অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাবেন— এমন প্রশ্নে উত্তরও তৈরি। বললেন, ‘দেশ ও অস্ট্রেলিয়া দুই জায়গাতেই থাকবো। তবে আমি চলচ্চিত্র নিয়মিতই করব। সাধারণত আমি বছরে তিনটি ছবি করি। সেটাই ধরে রাখব।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!