কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ছমি উদ্দিনের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

কক্সবাজারের কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এডভোকেট ছমি উদ্দিনের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নাগরিককে বিদ্যালয়টিতে ভর্তির অভিযোগ উঠেছে। স্বাক্ষর জালিয়াতি করে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার অভিযোগও উঠছে তার বিরুদ্ধে।

পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, আসামী জামিন নিয়ে দেওয়ার নামে এবং দোকানের নামে সেলামী নিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগও করেছে স্থানীয়রা তার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১টায় কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে স্থানীয়রা এসব অভিযোগ করেন।

কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে সভাপতি হওয়া ছমি উদ্দিনকে সভাপতি পদ থেকে প্রত্যাহার চেয়ে এ মানবন্ধন করে স্থানীয়রা। সভাপতি পদে তারা হেলান উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়ার দাবিও জানান।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ছমি উদ্দিন দীর্ঘ ৬ মাস কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি থাকাকালীন স্কুলের কোনো উন্নয়ন হয়নি। বরং রোহিঙ্গা ছাত্র ভর্তি এবং অতিরিক্ত ফি আদায় নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হিসেবে হেলাল উদ্দিন প্রতিবাদ করায় তাঁর বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন ছমি উদ্দিন।’

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আমিন শাকিল, রাজাপালং ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান রাব্বি, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগ রাজাপালং ইউনিয়ন সভাপতি সাইফুল ইসলাম, যুবনেতা মো. আলী, মো. রুবেল, কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক অপু বড়ুয়া প্রমুখ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগ কেন্দ্রীয় সদস্য আমান উল্লাহ মৌল্লা, আওয়ামীলীগ নেতা বুলু মিয়া, আবুল হোসেন, সমাজ নেতা মো. রসিদ, যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম, নুরুল আবছার, কৃষকলীগ নেতা আবদুর রহিমসহ সহস্রাধিক মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেয়।

এ সময় বক্তারা আরও বলেন, ‘মরহুম মৌলভী বখতিয়ার আহমদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ১৭ বছর ইউপি সদস্য হিসেবে জনসেবা করে গেছেন। তাহার মৃত্যুর পর ছেলে হেলাল উদ্দিন উপ-নির্বাচনে বিপূ্ল ভোটের ব্যবধানে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে পরাজিত করে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ইউপি সদস্য হিসেবে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ বছর সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন বখতিয়ার মেম্বার।’

তারা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের উখিয়া উপজেলা সভাপতি এবং রাজাপালং ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন বখতিয়া। তাদের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য হেলাল উদ্দিনকে সভাপতি পদে নিযুক্ত করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ডের বরাবর সুপারিশ করেন৷ কিন্তু কিছু ষড়যন্ত্রকারী বিভিন্ন মিথ্যাচার করে স্কুলের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায়। বিশেষ করে কুতুপালং গ্রামের একজন ব্যক্তি, যিনি কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে ভরাডুবি হয়, তিনি সবসময়ই চায় এলাকার উন্নয়ন বঞ্চিত করতে। তারাই মূলত মরহুম বকতার মেম্বারের পরিবারের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করে এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে যাচ্ছে।’

তারা বলেন, ‘বর্তমান সরকার কুতুপালং গ্রামে বিশাল উন্নয়ন করেছে। যা ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। যারা মিথ্যাচার করছেন তাদের মধ্যে ছমি উদ্দিন একজন মুখোশধারী ব্যক্তি। তিনি কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। তিনি অসংখ্য মানুষকে জামিনের কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাছাড়া চট্টগ্রামের আলোচিত এইট মার্ডারের আসামী শিবিরের নেতা নাছিরসহ আসামীদের জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন নেওয়ার অভিযোগে ছমি উদ্দিনের সনদ বাতিল হয়েছিল। জনবিচ্ছিন্ন একজন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছমি উদ্দিনের বিরুদ্ধে কুতুপালংয়ে ১৫ থেকে ১৬ জন ব্যবসারীর কাছ থেকে দোকানের সেলামী বাবদ ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব টাকা চাইতে গিয়ে অনেককেই মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!