কুটুম্ববাড়ি রেস্টুরেন্টে ঘুরছিল তেলাপোকার দল, রঙঘষা করমচাই ‘চেরি’

আট মাস আগেও এই একই রেস্টুরেন্ট শিশু শ্রমিক রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সেটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এবার তেলাপোকাযুক্ত দূষিত খাবার বিক্রি ও নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরির অভিযোগে ভোক্তা অধিকারের টিম জরিমানা করলো ওই একই রেস্টুরেন্টকে। সতর্ক করা হল ভবিষ্যতের জন্যও।

চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার মোড়ে অবস্থিত এই খাবারের দোকানের নাম— কুটুম্ববাড়ি রেস্টুরেন্ট।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি টিম চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার মোড়ের কুটুম্ববাড়ী রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখতে পায়, খাবার তৈরি করার স্থানটি ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি, আশেপাশে ঘুরছে তেলাপোকার দল। কিচেনে দেখা গেল ময়লা রাখার পাত্রটি খোলা। শুধু তাই নয়, রঙ দেওয়া করমচাকে ব্যবহার করা হচ্ছিল চেরি হিসেবে। এমনকি বিক্রির জন্য রাখা ফিরনিতেও পাওয়া গেল ময়লা।

হাতেনাতে এসব প্রমাণ পেয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অলংকার মোড়ের কুটুম্ববাড়ি রেস্টুরেন্টকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করে দিয়েছে ভবিষ্যতের জন্য।

ভোক্তা অধিকার টিম ওই রেস্টুরেন্ট থেকে পাওয়া নকল চেরি, ময়লা ও তেলাপোকাযুক্ত ফিরনি সেখানেই বিনষ্ট করে দেয়।

এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্ল্যাহ, সহকারী পরিচালক (মেট্রো) পাপীয়া সুলতানা লীজা এবং জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান। এপিবিএন-৯ এর একটি টিম অভিযানে সহায়তা দেয়।

এর আগে গত ২২ মে এই একই কুটুম্ববাড়ি রেস্টুরেন্টে শিশু শ্রমিক রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি শিশুশ্রম বন্ধের জন্য মুচলেকা দিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও গুণতে হয় রেস্টুরেন্ট মালিককে।

বুধবারের (৬ জানুয়ারি) অভিযানে কুটুম্ববাড়ি ছাড়াও আরও ছয় প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অভিযোগে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা প্রশাসনিক জরিমানা করা হয়।

এর মধ্যে মেয়াদবিহীন কাটা ওষুধ সংরক্ষণ করায় খুলশী থানার টেকনিক্যাল মোড়ের ফাতেমা ফার্মেসিকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা, পণ্যের প্যাকেটে উৎপাদন, মেয়াদ, মূল্য উল্লেখ না করা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্য তৈরি করায় গ্রিন বেকারিকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ সতর্ক করা হয়।

অন্যদিকে আকবরশাহ্ মাজার রোডের মালেক হোটেলকে হাইড্রোজ ব্যবহার করে জিলাপি তৈরি করায় ৬ হাজার টাকা, মিয়াজী স্টোরকে মেয়াদোত্তীর্ণ দই ও রসমালাই রাখায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া কোমল পানীয়ের কৌটায় মূল্য ঘষামাজা করে ৩৫ টাকার বদলে ৬৫ টাকায় বিক্রি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ রসমালাই বিক্রির অভিযোগে অলংকার মোড়ের মক্কা ফুডকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!