কী অপরাধ, কেন বাদ— জানতে চান বিদ্রোহী কাউন্সিলররা

বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম থিয়েটারে বৈঠক

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বসছেন আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতারা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মূলত বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়ার জন্যই এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে অনড় রয়েছেন এসব প্রার্থী। মনোনয়ন প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব প্রার্থীরা বলছেন শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন তারা। অন্যদিকে দলের নেতারা বলছেন দল করলে নিয়ম শৃঙ্খলা মানতে হবে তাদের।

বৈঠকের বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সাথে কথা হয় কাউন্সিলর মোর্শেদ আকতার চৌধুরী, আব্দুল কাদের, এইচএম সোহেল, জহুরুল আলম জসিম, সাহেদ ইকবাল বাবু, এএফ কবির আহমেদ মানিক ও সাবের আহমেদের সাথে। যাদের প্রত্যকেই এবার দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। তারা জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় থিয়েটার ইনস্টিটিউটে তাদের ডাকা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে এসব প্রার্থীরা বলেছেন কিসের ভিত্তিতে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে সে প্রসঙ্গে নেতাদের কাছে জানতে চাইবেন তারা। ওয়ার্ড কাউন্সিলরে দলীয় প্রতীক নেই জানিয়ে তারা বলছেন স্থানীয় পর্যায়ের এই নির্বাচনে স্থানীয় জনগণের চাপে নির্বাচন করতে হচ্ছে তাদের।

২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এইচএম সোহেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কাজ করেছি এলাকাতে, এলাকার মানুষজন চায় ভোট করি। আমি করবো।’

বরং সভায় নেতাদের কাছে তাকে কেন বাদ দেওয়া হলো তা জানতে চাইবেন জানিয়ে সোহেল বলেন ‘আমি কোন দুর্নীতি করিনি, অনিয়মও করিনি। আমাদের মিটিংয়ে ডাকলে প্রথমে প্রশ্ন করবো আমাদের অপরাধটা কী? আমাদের যদি কোন ভুল ত্রুটি থেকে থাকে আমাদেরকে দেখান। যদি কোন ভুল ত্রুটি না থাকে তাহলে নির্বাচন করতে বাধা কোথায়? আমি তো নৌকার নির্বাচন করবো। এটা তো বাদ দিতে পারবো না জীবনে।’

একই সুরে কথা বলেন ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোর্শেদ আকতার চৌধুরী। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এই সদস্য বলেন, ‘বলা হয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ যাদের ছিল তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে তো কোন অভিযোগ ছিল না। আমাকে কেন বাদ দেওয়া হলো— সে বিষয়ে জানতে চাইবো যদি সভায় ডাকা হয়। তবে নির্বাচনের বিষয়ে স্থানীয় ভোটারদের চাপ আছে। আমি এখান থেকে টানা দুইবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। আর এখানে তো দলীয় প্রতীক নেই। আজীবন নৌকার পক্ষে কাজ করেছি, এখনও করবো।’

তবে প্রার্থীদের এসব অভিযোগ করার সুযোগ নেই বলেই মনে করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। সুজন বলেন, ‘কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বাদ দেওয়া হয়নি। তাদেরকে তো বাদও দেওয়া হয়নি। একজন কোচ খেলার সময় কৌশলগত কারণে মাঠ থেকে একজনকে তুলে নিয়ে আরেকজন প্লেয়ারকে নামায় না? এখানেও তেমন হয়েছে।’

‘দল যাদেরকে ভাল মনে করেছে তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। দল করলে নিয়মনীতি শৃঙ্খলা মানতে হবে। আমাকে দল মনোনয়ন দিলে আছি, না দিলে নাই— এটা তো সুবিধাবাদী রাজনীতির কথা হলো’— যোগ করেন সুজন।

দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যদি উনারা মিটিংয়ে আসেন তাহলে ভাল। ওনারাও আমাদের দলের ত্যাগী নেতা কর্মী। তৃণমূল থেকে উঠে আসা অনেক নেতাকর্মী আছেন। সব কিছুই আছে। কিন্তু দল করতে হলে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে। না হলে দল তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!