কিভাবে বুঝবেন আপনার দেওয়া ভ্যাট ঠিক জায়গায় যাচ্ছে?

ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামেও বসছে ভ্যাটের মেশিন

ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বা ভ্যাটের মেশিন বসানো শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতিমধ্যে এক হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে।

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে কিছু কিনলে কিংবা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর দামের সঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট কেটে রাখা হয়। ক্রেতার পরিশোধ করা এই ভ্যাট আসলেই সরকার পাচ্ছে কিনা— সেটা নিয়ে সচেতন নন অনেক ক্রেতাই। ফলে দেখা যায়, ক্রেতা ভ্যাট পরিশোধ করলেও রেস্টুরেন্টসহ অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সেই টাকা সরকারকে না দিয়ে নিজেরাই আত্মসাৎ করে। চট্টগ্রামের নামি রেস্টুরেস্ট অ্যামব্রোশিয়ায় মাত্র কিছুদিন আগেও এরকম বিপুল অংকের ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার ঘটনা উদঘাটন হয়েছে।

তবে বিল দেওয়ার সময় একটু সচেতন হলেই ক্রেতা জেনে নিতে পারেন তার দেওয়া ভ্যাট সরকার ঠিকভাবে বুঝে পাবে কিনা। সাধারণত রেস্টুরেটে ক্রেতাকে পরিশোধিত বিলের একটি রসিদ দেওয়া হয়। সেখানে নিশ্চিত হতে হবে কত টাকা আপনার ক্রয় করা পণ্য বা খাবারের দাম, আর কত টাকা ভ্যাট। তবে ভ্যাটের রসিদ বা চালান দিলেই হল না, সেটি আসল কি নকল সেটিও বুঝতে হবে।

রেস্টুরেন্ট বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ইএফডি বসানো হয়েছে এমন সাইনবোর্ড থাকলে ভ্যাট পরিশোধ নিয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকা যায়। ইএফডি মূলত একটি কম্পিউটারাইজড মেশিন। রাজস্ব বিভাগ এই মেশিনের মাধ্যমে ব্যাবসায়িক লেনদেন বা কেনাবেচায় সরাসরি নজর রাখতে পারে। যেসব দোকানে এই মেশিন রয়েছে ওই দোকান থেকে পণ্য বা সেবা কিনলে যে রসিদ দেওয়া হবে, তাতে একটি বারকোড থাকে। স্মার্টফোনে সেই বারকোডটি স্ক্যান করলেই এনবিআরে দেওয়া ওই প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য চলে আসবে ক্রেতার সামনে।

এছাড়া ওই রসিদে মূসক চালান ৬ দশমিক ৩–এর কথা উল্লেখ থাকবে। এমনকি পণ্য বা সেবার মূল্যের কত শতাংশ ভ্যাট কাটা হয়েছে তাও লেখা থাকবে। যদি পণ্যমূল্যের সঙ্গে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করা থাকে, তাও উল্লেখ থাকবে। আড়ং কিংবা স্বপ্নের মতো সুপারস্টোরগুলোতে ইএফডি মেশিনের মতো মেশিন ব্যবহার করা হয়। এসব মেশিনের মাধ্যমে দেওয়া রসিদে ১৩ সংখ্যার ভ্যাটের নিবন্ধন নম্বর থাকে।

যদি কোনো রেস্টুরেন্ট বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইএফডি মেশিন না থাকে, তাহলে সাধারণত এসব দোকানের দৃশ্যমান স্থানে ভ্যাট নিবন্ধনের সনদ ঝুলিয়ে রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই সনদ যদি থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে ওই দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া আছে। এসব দোকানে দুই ধরনের ভ্যাটের রসিদ দেওয়া হয়। অনেক দোকানের রসিদে আবার ১৩ সংখ্যার বদলে ৯ বা ১১ সংখ্যার ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর দিয়েই বলা হয়— ভ্যাট নেওয়া হয়েছে। ৯ বা ১১ সংখ্যার ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর এখন অচল। মূলত ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার জন্যই এরকম নম্বরসম্বলিত ভ্যাট রসিদ ক্রেতাকে গছানো হয়।

অনেক প্রতিষ্ঠানে আবার হাতে লেখা ছাপানো মূসক চালান দেওয়া হয়। এসব চালান বিভিন্ন রংয়ের হলেও সাধারণত সাদা ও নীলই বেশি হয়ে থাকে। চালানে ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর, পণ্যের বিবরণ, দাম, ভ্যাট, বিক্রেতার স্বাক্ষর ইত্যাদি থাকবে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!