কাস্টমসে নিয়োগের নামে প্রতারণা, আরেক শিকার সাতক্ষীরার ফয়সাল

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগের আরেক শিকার সাতক্ষীরার ফয়সাল আহমেদ। অফিস সহায়ক পদে তার সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) যোগদান করার ছিলো। রোববার সাতক্ষীরা থেকে আসা দুই তরুণ সাইফুল ইসলাম এবং আবদুল গফুরের প্রতারণার খবর শুনে আর যোগদানের জন্য আর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে আসা হয়নি তার। প্রতারক চক্রের হোতা আনোয়ারুল ইসলামকে অফিস সহায়ক পদে চাকরির জন্য ২০ লাখ টাকা তুলে দেন তিনি।

ফয়সাল আহমেদের সাথে তার ইমো নাম্বারে যোগাগোগ করা হলে তিনি জানান, সাতক্ষীরার পরিচিত দুজন আবদুল গফুর এবং সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় আনোয়ারুল ইসলামের সাথে। চট্টগ্রামের ফকিরহাট এলাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের ২ নম্বর গেইটে দেখাও হয় তাদের। আনোয়ারুল সে সময় তাদের চট্টগ্রাম বন্দরের চাকরি করে বলে জানান।

চাকরি অনেকটা নিশ্চিত হওয়ায় ফয়সাল আহমেদ ১৩ শতক জায়গা বিক্রি, জমানো টাকা এবং ধার দেনা করে কয়েকটি কিস্তিতে এস এ পরিবহনে ২০ লাখ টাকা পাঠান আনোয়ারুলের ঠিকানায়। এর মধ্যে ১ লাখ টাকা এস এ পরিবহনের ফেনী শাখা এবং বাকী ১৯ লাখ টাকা আগ্রাবাদ শাখায় পাঠান বলে জানান ফয়সাল।

এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে ফয়সাল আরো জানান, যেসব প্রক্রিয়ায় চাকরির আনুষ্ঠানিকতা করা হয়েছে তাতে বোঝার কোন উপায় ছিল না তাদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। তার এলাকার দুইজন রোববার যোগদানের জন্য চট্টগ্রামে আসলেও ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য সোমবার আসার প্রস্তুতি ছিলো তার। দুপুরের পর তার এলাকার প্রতারিত ২ জনের কাছ থেকে জানতে পারেন আনোয়ারুল তাদের চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে আসার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন তিনি।

এই ঘটনায় থানায় মামলা করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়সাল আহমেদ বলেন, এমনিতে ২০ লাখ টাকা দিয়ে পথে বসে গেছি। নতুন করে কিছু করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই। তবে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে তার দাবি এভাবে যেন কোন প্রতারক চক্রের খপ্পরে আর কোন বেকার যুবকদের সর্বস্বান্ত হতে না হয়। ফয়সাল আহমেদের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কলরোয়া উপজেলায়। এর বাইরে আর কোন পরিচয় দিতে রাজি হননি তিনি। অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবসা করে বলে জানান ফয়সাল।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার ফখরুল আলমের স্বাক্ষর এবং সিল জাল করে ভুয়া নিয়োগপত্রের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এনবিআরকে চিঠি লিখছে কাস্টম হাউজ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের একটি সূত্র জানায়, প্রতারক চক্রের হোতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার সুপারিশ করা হচ্ছে ওই চিঠিতে।

প্রসঙ্গত: চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে বিভিন্ন পদে নিয়োগের কথা বলে সাতীক্ষারর তিন যুবক সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ১২ লাখ, আবদুল গফুরের কাছ থেকে ১১ লাখ, ফয়সাল আহমেদ থেকে ২০ লাখ, লালমনিরহাটের মিলন চক্রবর্তীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকাসহ মোট ৫১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। সংঘবদ্ধ চক্র এই জালিয়াতির সাথে জড়িত বলে ধারণা করছেন ভুক্তভোগীরা। প্রতারিত চার তরুণ বলেছেন তারা আনোয়রুল ইসলামের কাছে কুরিয়ার এবং চেকের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছেন।

এসসি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!