কাউন্সিলর রুমকীর সঙ্গে তর্কে জড়ানো পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে, বরখাস্ত নিয়ে ধোঁয়াশা (ভিডিও)

ভিডিও ছড়ানোয় আবার কোতোয়ালীকে দুষছেন রুমকী

চট্টগ্রামের এক নারী কাউন্সিলরের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ানো ট্রাফিক সার্জেন্ট মাইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। এর আগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তথ্য মিললেও ট্রাফিক দক্ষিণ জোনের কর্মকর্তারা এমন কিছু ঘটেনি বলে জানিয়েছেন।

তবে জানা গেছে, এক সদস্যের তদন্ত কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

মাইনুল হোসেন চট্টগ্রাম নগরীর ট্রাফিক সাউথ ডিভিশনে ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি পটিয়ার আমির ভান্ডার পুরান বাড়ির বাসিন্দা।

বুধবার (২ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১৬, ২০ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্তের সঙ্গে সেখানে দায়িত্বরত সার্জেন্ট মইনুলের বাকবিতণ্ডার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে উত্তেজিত অবস্থায় সার্জেন্ট মাইনুলকে ওই নারী কাউন্সিলরের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করতে দেখা যায়।

ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত’ দাবি করে কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভিডিওটি কোতোয়ালী থানা থেকেই ফাঁস হয়েছে।’

সার্জেন্ট মাইনুলের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে রুমকী বলেন, ‘সে (মাইনুল) আমার বাসায় এসে হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে মাফ চেয়ে গেছে। আইনি ব্যবস্থা নেবো কিনা আমি এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে তাকে বরখাস্ত করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে শুনলাম।’

এদিকে ঘটনার বিষয়ে সার্জেন্ট মাইনুল বলেন, ‘ভিডিওটি কিভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গিয়েছে সেটা একমাত্র আমার সিনিয়র কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। তবে আমি নিশ্চিত করে বলছি, ভিডিওটি আমি ছড়াইনি। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি ভিডিও ফাঁস করেছি তবে চাকরি ছেড়ে দেবো।’

সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মাইনুল বলেন, ‘আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমার মানসিক অবস্থা খুব খারাপ। আমি বলির পাঁঠা হয়ে গেলাম। প্লিজ এই বিষয়টা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করবেন না।’

তবে মাইনুলের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা স্বীকার করলেও বরখাস্তের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ট্রাফিক দক্ষিণ জোনের পরিদর্শক (এডমিন) অনিল চাকমা। তিনি বলেন, ‘গতকাল এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী একসপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে। তদন্ত রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে মাইনুলের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

বরখাস্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মাইনুলকে বরখাস্ত করা হয়নি। সে আজকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে গেছে।’

কোন্ স্পটে মাইনুল ডিউটি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাকে ডিউটিতে রাখা হয়নি।’

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে স্বামী প্রেমাংশু সেনগুপ্তের একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার ওসির সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ান কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত। ওই কাউন্সিলর ও তার স্বামী সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বলে জানান। আবার এ ঘটনায় তামাকুমন্ডী লেইন মোবাইল ব্যবসায়ী সমিতি কাউন্সিলর রুমকীর পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধনেও দাঁড়ান।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!