করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পথেই বাংলাদেশ, ৪৫ দিনের মধ্যেই প্রয়োগ করবে বায়োটেক

নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পেছনে ছুটছে গোটা বিশ্বই। এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার নিয়ে গোটা বিশ্ব যখন গলদঘর্ম, তখন বাংলাদেশেই সেটি আবিষ্কারের দাবি করেছে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) একটি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের অনেকেই জানে না এই নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। আমার স্বপ্নটা লং টাইম স্বপ্ন। এমন জিনিস রেখে যাবো যা আমি মরে যাওয়ার পরও মানুষের কাজে লাগে। এই কোম্পানির ফাউন্ডাররা বেঁচে নেই। কিন্তু কাজগুলো বেঁচে আছে। প্রজন্মর পর প্রজন্ম এই কোম্পানির বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জল করবে। তিনি আরও বলেন, ‌’আজ বাংলাদেশের জন্য বিশেষ দিন। বাংলাদেশ যে ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করবে তা অনেক দেশই বিশ্বাস করে না, কিন্তু এখন করবে।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ দাবি করেন, তারা প্রাণীদেহে অ্যান্টিবডির প্রমাণ পেয়েছে। প্রানীদেহে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে অ্যান্টিবডি তৈরী করেছে। ৬/৭ সপ্তাহ পর ভ্যাকসিনটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগে যাবে।

প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এ পর্যায়ে ভ্যাকসিনটি দ্বিতীয় ধাপে এনিমেল মডেলে ট্রায়াল করা হবে। এজন্য ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপরই এটি মানব শরীরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়া যাবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ পর ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়ার জন্য কোম্পানিটি সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাইবে। অনুমতি পেলে তারা ট্রায়ালে যাবে।

প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে, তারা পশুর শরীরে এই ভ্যাকসিনের সফলতা পেয়েছেন। মানবদেহেও এর সফলতা পাওয়া সম্ভব বলে আশা করছেন তারা।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আসলে আমরা কাজ শুরু করার পর প্রাথমিকভাবে এটা নিয়ে সফল হয়েছি। এনিমেল মডেলে এটা সফল হয়েছে। এখন আমরা আশা করি মানবদেহেও এটা সফলভাবে কাজ করবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাছে যাব। এরপর তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করবো।’

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী মঙ্গলবার (৩০ জুন) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৫ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। উক্ত সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করে। যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছেন তারা।

প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, উক্ত টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছেন যা ইতিমধ্যেই এনসিবিআই কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রকাশিত হয়েছে।

টিকা আবিষ্কারের বিষয়ে আরও বলা হয়, গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণাগারে আবিষ্কৃত টিকাটির বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাবরেটরি এনিমেল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ এন্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছেন বলে দাবি করছেন তারা।

বিষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এই টিকাটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।’

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!