করোনা নিয়ে বাবা-মায়ের যেসব বিষয় জানা জরুরি

বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। এ অবস্থায় সন্তানদের সুরক্ষায় বাবা–মায়ের জন্য কিছু প্রশ্নের জবাব ও করণীয় ঠিক করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ।

শিশুদের কি করোনাভাইরাস (কোভিড–১৯) হয়?
এটা নতুন ধরনের ভাইরাস। তাই এটি সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু জানা বাকি। শিশু বা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কিভাবে ক্ষতি করে সে সম্পর্কে আরও জানতে হবে। এখন পর্যন্ত জানা গেছে, ভাইরাসটিতে যেকোনো বয়সের মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত শিশুদের আক্রান্তের খবর কম পাওয়া গেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাসটি ভয়াবহ। বিশেষ করে বয়স্ক এবং আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য তা ভয়াবহ।

আমার সন্তান করোনাভাইরাস (কোভিড–১৯) আক্রান্ত হলে কী করব?
অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, এখন ফ্লুর মৌসুম। তাই পরিচ্ছন্ন থাকার নিয়ম-কানুন ভালোভাবে মেনে চলতে হবে।

আমার সন্তানকে কি স্কুলের বাইরে রাখা উচিত?
যদি আপনার সন্তানের মধ্যে কোভিড-১৯ লক্ষণ দেখা যায়, তবে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান এবং যথাযথ নিয়ম মেনে চলুন। লক্ষণ দেখা দিলে আপনার সন্তানকে বাড়িতেই রাখুন। অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো রোধে জন সমাগমস্থল থেকে দূরে রাখুন। সুস্থ থাকলে স্কুলেই রাখুন। তবে এ ক্ষেত্রে জাতীয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। যদি কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মেনে আপনার সন্তানের পড়াশোনা নিশ্চিত করুন। স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদের তদারকি নিশ্চিত করাও জরুরি যাতে তারা কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষিত থাকে। কারণ নজরদারি না রাখলে অন্যান্য সম্ভাব্য ঝুঁকিরও মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে।

আমার পরিবারের ভ্রমণের সময় কি সতর্কতা নেওয়া উচিত?
যে দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, সেখানে যাওয়ার আগে সেই দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, প্রবেশের পর কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা এবং অন্যান্য বিষয় দেখে নেওয়া জরুরি।

অন্তঃসত্তা নারীর মাধ্যমে গর্ভের সন্তানের কি করোনাভাইরাস হতে পারে?
এ ব্যাপারে এখনও যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের মাধ্যমে গর্ভের সন্তান করোনাভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে কিনা বা সম্ভাব্য কী ক্ষতি হতে পারে সন্তানের। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও অন্যদের মতো সর্তকর্তা ব্যবস্থা নিতে হবে।

করোনাভাইরাস আক্রান্ত মা কি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন?
যেসব মা আক্রান্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রয়েছেন এবং জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ রয়েছে, তাঁদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিতে হবে এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। মায়ের বুকের দুধের উপকারিতার বিষয়টি বিবেচনা করে এবং শ্বাসকষ্টজনিত অন্য ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে মায়ের দুধের তেমন কোনো ভূমিকা না থাকায় মা সন্তানকে দুধ খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে পারেন। তবে এর আগে অবশ্যই তাঁকে সব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লক্ষণ রয়েছে মায়েরাও দুধ খাওয়াতে পারবেন। তবে মাস্ক পরে, হাত ধুয়ে এবং সব ধরনের বস্তুর উপরিভাগ জীবানুনাশক করার মতো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

মেডিকেল মাস্ক কি পরা উচিত?
আপনার হাঁচি-কাশি হলে অন্যদের সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য আপনাকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। যদি কোনো লক্ষণ না থাকে, তাহলে মাস্ক পরার দরকার নেই। মাস্ক ছিঁড়ে গেলে বুঝতে হবে ব্যবহৃত হয়েছিল। ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি এড়াতে সেগুলো যথাযথভাবে ফেলে দিন। শুধু মাস্ক ব্যবহার সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে অবশ্যই ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় নাক-মুখ ঢাকতে হবে। ঠান্ডা-জ্বর রয়েছে ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!