করোনা ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রামের সড়কে ট্রাফিক পুলিশ, ছুটি নেই কারও

লকডাউন নিশ্চিত করতে ২৪ ঘণ্টাই সড়কে থাকছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা। আবার যানবাহনের অবাধ চলাচল ঠেকাতে কিংবা সন্ধ্যায় যানচলাচল বন্ধের নির্দেশনা কার্যকর করতে ট্রাফিক পুলিশের ছুটি অঘোষিতভাবেই বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের এ বিভাগটির ৪ জন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

জানা গেছে, নগরীতে প্রবেশ এবং বহির্গমন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে নগরীর প্রবেশমুখগুলোতে বসানো হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরাও এ নির্দেশনা কার্যকরে কাজ করে যাচ্ছে।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) নগরীর সিটি গেইট, অক্সিজেন মোড়, কাপ্তাই রাস্তার মাথা এবং শাহ আমানত সেতুর মোড়ে ও নগরীর বাইরের সড়ক-মহাসড়কেও জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের সতর্ক থাকতে দেখা গেছে।

এদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আরকান সড়কে পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়ায় পৃথক পৃথকভাবে চেক পোস্ট বসিয়েছে জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

সিএমপি ও জেলা ট্রাফিক বিভাগ জানায়, করোনা মোকাবেলায় বিশেষ কর্মসূচির কারণে নগরীর ভেতরে ৬টি ও নগরের বাইরে ৬টি পয়েন্টে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া গাড়ি আটক করছে তারা।

চট্টগ্রামে ট্রাফিক পুলিশের চারজন সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছে এ পর্যন্ত। তাদের সংস্পর্শে আসায় সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের দুই জোনের ১৮৭ জন ট্রাফিক পুলিশ রয়েছেন কোয়ারেন্টাইনে।

সিএমপি ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উত্তর এবং বন্দর জোন মিলিয়ে ৫০৩ জন ট্রাফিক সদস্য বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন। সিএমপির ট্রাফিক উত্তর জোনে সদস্য রয়েছেন ২৬০ জন। তার মধ্যে ১০ জন ট্রাফিক পরিদর্শক, ৮৪ জন সার্জেন্ট, ৩৪ জন সহকারী ট্রাফিক উপ-পরিদর্শক ও সহকারী উপ-পরিদর্শক এবং ২৬০ জন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করছেন।

অন্যদিকে ট্রাফিক বন্দর জোনে সদস্য রয়েছেন ১১৫ জন। এদের মধ্যে ৬ জন ট্রাফিক পরিদর্শক, ৩০ জন সার্জেন্ট ও সহকারী উপ-পরিদর্শক এবং ৭৯ জন কনস্টেবল ২৪ ঘণ্টায় তিন শিফটে ডিউটি করে যাচ্ছেন।

উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম মিলিয়ে জেলা ট্রাফিক পুলিশে ১১৯ জন সদস্য ২৪ ঘণ্টায় তিন শিফটে কাজ করে যাচ্ছেন। তার মধ্যে ট্রাফিক পরিদর্শক আছেন ৯ জন, সার্জেন্ট ১৩ জন, ট্রাফিক উপ-পরিদর্শক ৮ জন, সহকারী ট্রাফিক উপ-পরিদর্শক ২১ জন এবং কনস্টেবল আছেন ৬৮ জন।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে ট্রাফিক পুলিশের ১২০ জন সদস্যের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, ‘করোনার ঝুঁকির মধ্যেও আমাদের সদস্যরা সড়কে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনার ঝুঁকি এড়াতে মাস্ক, গ্লাভসসহ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েই কাজ করছেন তারা। এই কঠিন সময়েও তারা নিজেদের উৎসাহে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন-উত্তর) মো. মহিউদ্দিন খান বলেন, ‘করোনা ঝুঁকির মধ্যেও সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ ছুটিও নেয়নি। লকডাউনে মানুষকে ঘরে রাখতে ট্রাফিক বিভাগও কাজ করছে। এছাড়া সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ ইতিমধ্যে ৭ হাজার পরিবহন শ্রমিককে খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছে।’

এমএফও/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!