‘করোনা উপসর্গ’ রোগীরা পাবে মা ও শিশু হাসপাতালের ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবা

কল করলেই ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার, টেকনেশিয়ানসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যাবে রোগীর বাসায়। পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন দিয়ে দ্রুত পরীক্ষা করা হবে রোগীর অবস্থা। রিপোর্ট ভালো আসলে দেয়া হবে ঔষধ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ। আর রিপোর্ট খারাপ আসলে সিট খালি থাকলে তারা সাথে করে নিয়ে এসে ভর্তি করাবেন হাসপাতালে। অথবা অন্য হাসপাতালে ভর্তির জন্য পরামর্শ দিবেন।

১০০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ওয়ার্ড চালু করার পর এবার করোনা উপসর্গের রোগীদের জন্য এমনই একটি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবা চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতাল।

আর এজন্য একজন ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার ও টেকনেশিয়ানের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল টিম গঠন করতে যাচ্ছে তারা। নির্ধারিত হট লাইনে কল দিলেই এই টিম অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছুটে যাবেন রোগীর বাসায়। আর এই অ্যাম্বুলেন্সে সেট করা থাকবে পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন, অক্সিজেনসহ নানা ধরনের যন্ত্রপাতি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে মা ও শিশু হাসপাতাল করোনা ম্যানেজমেন্ট এবং করোনা ট্রিটমেন্ট কমিটির যৌথ সভায় এই সেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই সেবা চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এর জন্য ৪টি ফোন নম্বর দেয়া হবে। ইতোমধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ ছাড়া বাকি কাজ প্রায় শেষের পথে। চিকিৎসক নিয়োগ হলেই তা চালু করা হবে। যা ২৪ ঘণ্টায় চালু থাকবে।

বর্তমানে মা ও শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৯৫টি শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট) শয্যা, ৩০টি ক্যাবিন ও বাকিগুলো সাধারণ শয্যা। এর সাথে আরও ৩০টি আইসোলেশন শয্যা চালু করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গতবছর করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করি। কিন্তু সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ হার আবার বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে কোন বেড খালি নেই। অনেক রোগী এসে ফিরে যাচ্ছে। তাই আমরা এবার ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা চালু করতে যাচ্ছি। একজন ডাক্তার, ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার ও টেকনেশিয়ানের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হবে। নির্ধারিত হট লাইনে কল দিলেই এই টিম অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছুটে যাবেন রোগীর বাসায়। আর এই অ্যাম্বুলেন্সে সেট করা থাকবে পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন, অক্সিজেনসহ নানা ধরনের যন্ত্রপাতি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে এই সেবা চালু করতে যাচ্ছি। খুব সামান্য খরচেই এই সেবা দেয়া হবে। এই সেবার পাশাপাশি আমরা করোনা ইউনিটে আরও ৩০টি আইসোলেশন বেড যুক্ত করবো। প্রথমে ১৮ থেকে ২০টি, পরবর্তীতে আরো ১০টি।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল করোনা ইউনিট বাস্তবায়ন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন, ‘গতবছর করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখি থাকার সময় চট্টগ্রামের মানুষ যখন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছিল না, তখন আমরা নিজেরা এগিয়ে এসে ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করি। ইতোমধ্যে আমরা এই ইউনিটে ৪ হাজারের অধিক রোগীকে সেবা দিয়েছি। বর্তমানে আমাদের এই করোনা ইউনিটে ভেন্টিলেটর, লাইফ সাপোর্ট পর্যাপ্ত হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানুলা রয়েছে। পাশাপাশি এই ইউনিট মেডিসিন বিভাগের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে করোনার প্রকোপ আবার বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা করোনা রোগীর উপছে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। রোগীরা যাতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় তাই আমরা এবার বিকল্প উপায়ে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতে করে রোগীরা হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করে হয়রানি হওয়া থেকে যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি স্বল্প খরচে ভালো মানের সেবাও পাবে।’

এমআইটি/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!