করোনায় চাকরি হারিয়ে আত্মহত্যায় মুক্তি খুঁজেন পাঁচলাইশের প্রদীপ

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন কাপাসগোলা এলাকায় প্রদীপ ঘোষ বাবলা (৫২) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রদীপ ঘোষ একই এলাকার মৃত সাধন চন্দ্র ঘোষের ছেলে। কাপাসগোলা এলাকার এলিগেন্টস হাইটস ভবনের ৫ম তলায় বুধবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, করোনাকালে চাকরি চলে যায় প্রদীপের। ফলে দীর্ঘ এ সময় সংসারে টানাপড়েন চলছিল। এরই মধ্যে ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়েন তিনি। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি ও স্ত্রীর সাথে মলোমালিন্যও হচ্ছিল। এসব নিয়ে তিনি বিষন্নতায় ভুগছিলেন। এসব কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতেন পারে বলে পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছেন।

প্রদীপের স্ত্রী সঞ্চিতা বলুয়ারদীঘি শ্মশানে আহাজারি করছেন আর বলছেন, কত দুঃসময় গেছে তখন তার স্বামী পাশে ছিল, আজ কেন সামান্য বিষয়ে রাগ করে তাকে ছেড়ে চলে গেল? তার সিঁথিতে সিদুর যে আর রইলো না। মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদছিল ৯ বছরের ছেলে অনিকেত।

প্রদীপ ঘোষের ছোটভাই শৈবাল ঘোষ জানান, ‘করোনাকালীন সময়ে বেকারত্বের কারণে তার ভাই দেনায় পড়ে গিয়েছিলেন। আগে ব্রোকারির কাজ করলেও এখন সে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অনেক ঋণ হয়ে যায়। কয়েকমাস যাবত তিনি হতাশায় ভুগছিলেন।’

শৈবাল ঘোষ আরও জানান, ‘দুইদিন আগে স্ত্রী সঞ্চিতার সাথে প্রদীপের টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়া হয়। বৌদি রাগ করে তার বোনের বাড়িতে চলে যান। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তার ভাই খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়লে গভীর রাতের কোন এক সময় তিনি ফ্যানের সাথে রশি পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন। আজ সকালে ঘরের দরজা না খোলায় সবাই ডাকাডাকি শুরু করে। পরে দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর গিয়ে দেখা যায়, তার ভাইয়ের লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলছে।’

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. হামিদ জানান, ‘রাত আড়াইটারদিকে প্রদীপ ঘোষকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বেলা ১১টার দিকে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার হয় লাশঘরে থেকে।’

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!