করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মুসলিম ব্যক্তিদের মরদেহ দাফন করে চলেছেন তিনি। হিন্দু ধর্মের হলে নিজেই করছেন দাহ করার আয়োজন। একে একে ৬১ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের দাফন ও সৎকার করেছেন তিনি। এবার করোনাভাইরাস আঘাত হানলো তার শরীরেও। শুধু তাই নয়, করোনা আক্রান্ত হয়ে তার স্ত্রীও এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
বলছিলাম নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের কথা।
করোনায় হার মানা মানুষের শেষ বিদায়ে জীবনবাজি রাখা খোরশেদের এখন নিজের স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে দরকার শুধুমাত্র একটি আইসিউ বেড। জনদরদি এই কাউন্সিলরের আশংকাজনক অবস্থায় থাকা স্ত্রীর জন্য একটি আইসিউ বেড খালি পাওয়া যাচ্ছে না গোটা রাজধানীর কোথাও।
চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বললেন, ‘অনেক কষ্ট করেছি আমরা। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা জীবনবাজি রেখে নারায়নগঞ্জের মানুষকে বাঁচাতে তৎপর। এখন আমি ও আমার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত। দুই দিন ঘুরাঘুরির পর রোববার বিকেল ৪টার দিকে স্কয়ার হাসপাতালে আমার স্ত্রীর জন্য আইসিইউ ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, সোমবার সার্বিক অবস্থা বোঝা যাবে।’
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরদিনই মানুষকে সচেতন করতে ২০ হাজার লিফলেট বিতরণ শুরু করার মধ্য দিয়ে নারায়নগঞ্জের মাঠে নামে খোরশেদ। পরে ১৮ মার্চ থেকে ৬০ হাজার বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণ করেন তিনি। পরে সিটি করপোরেশনে আবেদন করেন নারায়ণগঞ্জে করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন অনুমতি চেয়ে। একসঙ্গে চান করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া লোকদের দাফনের অনুমতিও।
৮ এপ্রিল প্রথম করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির মরদেহ দাফন করেন খোরশেদ। মে মাসের শেষ পর্যন্ত মোট ৬১ জন করোনা আক্রান্তের শেষ বিদায়ের আয়োজন করেন তিনি। তার এ কাজে সহযোগিতায় ছিলেন ১২ জন স্বেচ্ছাসেবক। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় কর্মহীন ও অসহায় পরিবারের মধ্যে হাজার হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন এই কাউন্সিলর।
এমএফও