করোনার টিকার অপেক্ষা না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের

‘২০২১ সালের জানুয়ারিতে আমার অনার্স শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো আমি তৃতীয় বর্ষে পড়ে আছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে করোনার টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। কিন্তু কোথায় সেই টিকা? আমরা চাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেই টিকা দেয়া হোক৷ ভ্যাকসিন শিক্ষার্থীদের জন্য মুলা ঝুলিয়ে রাখার মতো। টিকার দোহাই দিয়ে বারবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দেওয়া আমরা কোনভাবেই মেনে নিবো না।’

সোমবার (২৪ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানস্থ প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই কথাগুলো বলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফারদিন।

করোনাভাইরাসের দোহাই দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না রেখে দ্রুত খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধনটি আয়োজন করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধন শেষে বক্তব্যে একই বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমাদের প্রায় দেড় বছর ধরে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। অসমাপ্ত শিক্ষাজীবন নিয়ে চাকরির কোন সুযোগ নেই। পরিবার থেকে প্রতিনিয়ত চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের৷ মুখোমুখি হতে হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন মানুষের বুলির। আর এসব আমাদের অপদার্থ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে চারপাশের মানুষের কাছে। যা একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুবই মর্মান্তিক যন্ত্রণা। আর এর জন্য দায়ী আমাদের শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা ও সরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সব সচল রয়েছে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অচল। রাস্তা-ঘাট, বিনোদনকেন্দ্র, কেন্দ্র, শপিংমল সব কিছু খোলা থাকতে পারে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যত সমস্যা। করোনার সাথে যুদ্ধ করেই আমাদের বাঁচতে হবে। এর জন্য থমকে গেলে চলবে না। আমরা সেটাই চাই।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রুদ্র বলেন, ‘২০২০ সাল থেকে বন্ধ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের শিক্ষাজীবন প্রায় বিপন্ন হওয়ার পথে। এই বন্ধ আমাদের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি করছে। শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে প্রবাসে বা দিনমজুরের কাজে যেতে বাধ্য হচ্ছে। কি বেহাল দশা আমাদের শিক্ষার। আমাদের যদি এসবই করতে হয়ে তবে শিক্ষার দরকার কি। আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, চবি শিক্ষার্থী মো. ওসমান, সুধী কুমার তঞ্চঙ্গা, মো. জিলানী, দোসর রহমান, দ্রুব ভাট্টাচার্য, চট্টগ্রাম সিটি কলেজে শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম, ফারুক হোসেন সহ আরও অনেকে। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

এমআইটি/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!