‘করোনারোগী’ যাচ্ছেন ব্যাংকের চাকরিতে, বাবা বসছেন দোকানেও

মাত্র তিন দিন আগে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়া রোগী যাচ্ছেন ব্যাংকের চাকরিতে। পরিবারের সদস্যরা নিয়ম করে খুলছেন দোকানও। করোনা আক্রান্ত হয়েও আইসোলেশনে না গিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগী ও তার পরিবারের এরকম অবাধ জীবনযাত্রা নিয়ে আতঙ্কে আছে পুরো এলাকাবাসীই। অন্যদিকে যার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ— তিনি বলছেন, ১৭ দিন আইসোলেশনে থেকে তিনি এখন সুস্থ। উল্টো এলাকাবাসীর বিরুদ্ধেই হয়রানির অভিযোগ তুলছেন তিনি।

জানা গেছে, গত ২৫ জুন প্রকাশিত ফলাফলে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নের কাটিরহাট এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ (ছদ্মনাম)। ২৪ জুন নমুনা দিয়েছিলেন তিনি। হাটহাজারী সদরের একটি বেসরকারি ব্যাংকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে চাকরিতে থাকা এই ব্যক্তি সর্বশেষ রোববারও (২৮ জুন) ব্যাংকে ডিউটি করেছেন। অন্যদিকে তার বাবাও নিয়মিত দোকান খুলে ব্যবসা করছেন স্থানীয় কাটিরহাট বাজারে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাজ্জাদ (২০) চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘১১ জুন আমার জ্বর আসে সামান্য। এটা আমি অফিসে জানালে অফিস থেকে আমাকে করোনা টেস্ট করতে বলে আর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলে। এরপর থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম আমি। ১৮ জুন আমি করোনা টেস্টের নমুনাও দিই। কিন্তু সেই নমুনা নাকি নষ্ট হয়ে গেছে। ২৪ জুন তারা আবার নমুনা নেয়। এখন বলছে আমি করোনা পজিটিভ। কিন্তু আমার তো কোন উপসর্গ নাই। ১৮ দিন আগে সামান্য জ্বর ছিল, সেজন্য আমি ১৭ দিন কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম।’

কোয়ারেন্টাইনে না থেকে চাকরিতে যোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখা করে সাজ্জাদ বলেন, ‘নতুন করে আরও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে কিভাবে থাকবো আমি? আমি একটা চাকরি করি। এটা দিয়ে আমার পরিবার চলে। এভাবে হলে তো চাকরি চলে যাবে। তখন কিভাবে চলবে আমার পরিবার?’

করোনার কোনো উপসর্গ না থাকলেও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন জানিয়ে সাজ্জাদ বলেন, ‘প্রথমে নমুনা নিয়ে টেস্ট করলো না। পরে আবার ডেকে টেস্ট করে বলছে পজিটিভ। অথচ ১৭ দিন আগে সামান্য জ্বর হওয়া ছাড়া কোন সমস্যাই হয়নি আমার। বরং এখন যা হচ্ছে তাতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছি আমরা। আমার মা সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে। আমি আবার টেস্ট করতে চাই। কিন্তু আমাদের বলা হয়েছে ২১ দিনের আগে তা সম্ভব না। এখন কিভাবে কী করবো তাও বুঝতে পারছি না।’

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের পক্ষ থেকে বিষয়টি হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনকে জানানো হলে তিনি এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!