করোনাকাণ্ডে দেড় মাসেই চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ক্ষতি ৩০ কোটি টাকা

করোনা তাণ্ডবে ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে বন্ধ রয়েছে রেল চলাচল। ফলে গত দেড় মাস এ খাতে আয়ের কোটা শূন্য। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় শুধু চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে মাসিক টিকেট বিক্রি থেকে আয় আসে গড়ে ১১ কোটি টাকা। পণ্য পরিবহন খাতে গড়ে আয় আসে আরও ৮ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে মাসিক আয় ২০ কোটি টাকা। সে হিসেবে ১ মাস ১৬ দিন ট্রেন চলাচল বন্ধের কারণে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আয় বঞ্চিত হয়েছে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন। যা শুধুমাত্র ১১টি আন্তঃনগর ও ৪টি মেইল ট্রেনের পণ্য পরিবহন খাতে আয়ের হিসাব।

মঙ্গলবার (১২ মে) এ বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পূর্ব রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সারাদেশে করোনা তাণ্ডবের হাত থেকে যাত্রীদের রক্ষায় ২৬ মার্চ থেকে রেলপথ বন্ধ রাখা হয়। টানা ১ মাস ১৬ দিন পার হলেও রেলপথ চালুর সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ঈদকে সামনে রেখে সীমিত আন্তঃনগর ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিতে দফায় দফায় বৈঠক করেও এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি রেলপথ মন্ত্রণালয়।

এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল পরিবহন কর্মকর্তা ওমর ফারুক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সীমিত পরিসরে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমরাও শুনেছি। কিন্তু লিখিত আদেশ না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

সারাদেশে মোট আন্তঃনগর ট্রেনের সংখ্যা ১০২টি। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যায় ১১টি আন্তঃনগর ও ৪টি মেইল ট্রেনসহ মোট ১৫টি ট্রেন। আপ-ডাউন হিসেবে ২২টি ও ৮টি। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে দৈনিক টিকেট বিক্রির গড় আয় ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬৬ টাকা। ১ মাসে প্রায় ১১ কোটি টাকা। পণ্য পরিবহনে দৈনিক আয় গড়ে ২৭ লাখ টাকা। যা মাসিক ৮ কোটি টাকার বেশি। উভয় খাতে প্রায় ২০ কোটি টাকা আয় হয় চট্টগ্রাম থেকে। বাকি ১৫ দিনের গড় হিসেব করলে দাঁড়ায় আরও ১০ কোটি টাকা। শুধু চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন রুটে যাত্রাকালীন ১ মাস ১৫ দিনে সাধারণ আয় ৩০ কোটি টাকা। দেড় মাস ট্রেন চলাচল বন্ধের কারণে চট্টগ্রাম স্টেশনের লোকসান ৩০ কোটি টাকা।

এদিকে, করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চাহিদা না থাকায় ১ মে ৩ জোড়া স্পেশাল ট্রেন পণ্য পরিবহনের কাজে চলাচল শুরু করলেও তিনদিনের মাথায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবার ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের কথা মাথায় রেখে সীমিত পরিসরে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলে কয়েকশ কোটি টাকা লোকসান গুণতে হবে রেল পথ বিভাগকে।

যদি সীমিত আকারে রেলপথ চালুর সিদ্ধান্ত আসে তবে চট্টগ্রাম (পূর্ব) প্রস্তুত রয়েছে বলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান বিভাগীয় কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের পক্ষ থেকে সীমিত আকারে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে এখনও গ্রিন সিগনাল না আসায় নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না এবার ঈদে আদৌ ট্রেন চলবে কিনা।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!