কখনো ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো সাংবাদিক—লোক ঠকানোয় ‘বিশেষজ্ঞ’ পারভিন ধরা

নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন তিনি। অভিযান চালানোর নামে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। এনজিও সংস্থার নামে গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকাও হাতিয়ে নেন তিনি। এ টাকা ফেরত চাইতে গেলে গ্রাহকদের দেওয়া হয় হুমকি, ফাঁসানো হয় চুরির মামলায়। আবার চাকরি দেওয়ার নামে মানুষ থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ ওঠার পর চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকা থেকে পারভিন আক্তার (৫০) নামের এক প্রতারককে আটক করেছে র‍্যাব।

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পাহাড়তলী থানার ডিটি রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে।

জান গেছে, নিজেকে কখনো পরিচয় দেন ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো তিনি হয়ে যান ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক, ক্যাব সভাপতি কিংবা মানবাধিকারকর্মী। সাংবাদিক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, দেশী-বিদেশী নিয়োগকারী সংস্থার মহাব্যবস্থাপক, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী, পরিবেশবাদী হিসেবেও তার পরিচয় মিলেছে বিভিন্ন প্রতারণার কাজে।

র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান জানান, প্রতারণার দায়ে ২০১৪ সালে সমবায় অধিদপ্তর ‘স্বীকৃতি’ নামে এক সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করে। তবুও এই সংস্থার নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন পারভিন আক্তার। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানা ও আদালতে ১০টির বেশি প্রতারণা মামলা রয়েছে।

এছাড়া পারভিন আক্তার বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা দেখিয়ে একটি মন্ত্রণালয়ে ৬ কোটি ৩৫ লক্ষ ২৯ হাজার ৪০০ টাকার একটি প্রস্তাবও জমা দেয়।

শনিবার পাহাড়তলী থানার ডিটি রোড এলাকার ঢাকা ভবনের (ইউনিয়ন ব্যাংক ভবন) দশ তলায় অবস্থিত ‘স্বীকৃতি’র কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‍্যাব।

র‍্যাব সংস্থাটির অফিস ও পারভিন আক্তারের বাসা থেকে সঞ্চয় ও ঋণ পাসবই, পূরণ করা চেক, স্বাক্ষর করা ফাঁকা চেক, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও জমা বই, চুক্তিনামা, স্বাক্ষর করা ফাঁকা স্ট্যাম্প, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের জরিমানা আদায়ের রশিদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সিল, স্বীকৃতি নামক সংস্থার ডেবিট ও ক্রেডিট ভাউচার বই, ফিক্সড ডিপোজিট রশিদ বই, অনুদান আদায়ের রশিদ বই, ক্যাশ পজিশন বই, প্যাড, বিদেশগমনের লিফলেট, বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রাম সম্বলিত ভিজিটিং কার্ড, নিয়োগপত্র, লেজার বই, অঙ্গীকারনামা বই, মাসিক চাঁদা আদায়ের রশিদ, মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির বই, হিসাব খোলার বই, সাপ্তাহিক টপশিট, মাসিক সঞ্চয় আবেদন বই, প্রকল্প প্রস্তাব, আইডি কার্ড, ৪টি পাসপোর্ট, ভুয়া এনআইডি কার্ডসহ বিপুল পরিমাণ কাগজপত্র জব্দ করেছে।

সিএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!