কক্সবাজার সৈকত ও পাহাড় বাঁচাতে হাইকোর্টের রুল

কক্সবাজারের পাহাড় ও সমুদ্র সৈকত রক্ষার প্রশ্নে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ ক্ষেত্রে বিবাদিদের কেন ব্যর্থ বলে ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

রুলে আদালত জানতে চেয়েছেন, কোনো রকম পরিবর্তন, রূপান্তর, কাটা বা ধ্বংসের হাত থেকে কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া, উখিয়া এবং পেকুয়া উপজেলার পাহাড়, পাহাড়ি বন, টিলা রক্ষার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না?

একইসঙ্গে সমুদ্র সৈকতের উন্নয়ন নিষিদ্ধ ও সংরক্ষিত এলাকার দূষণকারী, বেআইনি ও অননুমোদিত স্থাপনা বা অবকাঠামো অপসারণ, ধ্বংসের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে সেটাও।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তিন মাসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিবেশ সচিব, বিমান ও পর্যটন সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, পানিসম্পদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ২২ বিবাদিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া, উখিয়া এবং পেকুয়া উপজেলায় পাহাড়,পাহাড়ি বন, টিলা কেটে স্থপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য ব্যাপকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে।

রুলে আদালত জানতে চেয়েছেন, কক্সবাজার পৌর এলাকায় হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাজারসহ বাণিজ্যিক স্থাপনায় পরিবেশগত ছাড়পত্র ও পয়ঃশোধন প্লান্ট নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সমুদ্র সৈকতে উচ্ছিষ্ট প্লাস্টিক ও পৌরবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কক্সবাজার পৌরসভাকে জরুরি উদ্যোগ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না?

এছাড়া কক্সবাজার পৌরসভার নাজিরারটেক থেকে টেকনাফের বদর মোকাম পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত, সৈকতের ঝাউ গাছসমৃদ্ধ ৩০০ মিটার উন্নয়ননিষিদ্ধ ও ৫০০ মিটার সংরক্ষিত এলাকা এবং কক্সবাজার শহর ও সৈকত উন্নয়ন পরিকল্পনার সুপারিশকৃত পর্যটন এলাকায় ‘ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের’ ব্যবহার নিষিদ্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না— জানতে চাওয়া হয়েছে তাও।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন মিনহাজুল হক চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

আইনজীবী সাইদ আহমেদ কবির বলেন, ‘পরিবেশগত বিবেচনায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর এলাকার প্রাণ বৈচিত্র, নির্মল জলরাশি এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষার জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে এ এলাকাকে প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে। ফলে এ এলাকায় সব ধরনের স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণ নিষিদ্ধ।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি এই প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকায় লাবনী পয়েন্টে সার্কিট হাউজ নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ১০ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ‘ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ফর কক্সবাজার টাউন এন্ড সি আপ টু টেকনাফ’ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী জোয়ার ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে পৌরসভার প্রথম ৩০০ মিটার ‘নো ডেভেলপমেন্ট জোন’ জোন। এ এলাকায়ও কোনো স্থাপনা বা নির্মাণ করা যাবে না। অথচ এসব এলাকায় দেদারসে নির্মাণ কাজ চলছে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!