কক্সবাজার সৈকতে হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ‘ওয়াকওয়ে’

শাহেদ ইমরান মিজান, কক্সবাজার :

পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সৈকতে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বমানের ‘বীচ ওয়াকওয়ে’। বালিয়াড়ি আর ঝাউবীথির বুক চিরে নির্মিত হচ্ছে এই দৃষ্টিনন্দন ‘বীচ ওয়াকওয়ে’। প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ‘বীচ ওয়াকওয়ে’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী জানুয়ারি নাগাদ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

beach-walk-way
বিশ্বমানের এই দৃষ্টিনন্দন ‘বীচ ওয়াকওয়ে’ নির্মিত হলে কক্সবাজার সৈকতের দৃশ্য একেবারে পাল্টে যাবে। এর সাথে কক্সাজারের পর্যটন শিল্প নতুন পাবে। প্রসারিত হবে পর্যটনের সুবিধা, মোহিত হবে পর্যটক আর বেড়ে যাবে পর্যটনবান্ধব ব্যবসাপাতি। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা এমনটা আশা করছেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য মতে, প্রায় দুই কিলোমিটার ‘বীচ ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ পর্যটকবান্ধব প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইসিবি। ‘সাইকেলওয়ে-ওয়াকওয়েসহ পর্যটকদের জন্য অন্যান্য সুবিধা নির্মাণ’ প্রকল্পটি বর্তমানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। উন্নত বিশ্বের সৈকতের সাথে তাল মিলিয়ে করা হয়েছে বেশ কিছু ড্রয়িংও। ফাইলটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, এ সড়কের দুই পাশে কপি শপ, চেঞ্জিং রুম, সাইকেল ক্যান্টিন, বাথররুম ব্যবস্থা থাকবে। বিকালবেলার পর্যটকদের জন্য স্পেশাল বিনোদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে এখানে। সড়কের দুই পাশে থাকবে পর্যাপ্ত লাইটিং, ল্যান্ড স্কেপিং, ট্রি প্লান্টেশন তথা মনোমুগ্ধকর বাগান। সম্প্রতি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই স্থানটি পরিদর্শন করেছেন।
সৈকতের সৌন্দর্য্য বাড়লে পর্যটকও আরো বাড়বে বলে আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বিশ্বেও দীর্ঘতম সৈকত হিসাবে এখনো পর্যন্ত কক্সবাজার সৈকতের অবকাঠামো সে ভাবে গড়ে উঠেনি। ‘বীচ ওয়াকওয়ে নির্মিত হলে এর অনেক পূর্ণতা আসবে। তাতে করে বাড়বে যাবে পর্যটক।
হোটেল-মোটেল-গেণষ্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘কক্সবাজার বর্তমানে বিশ্ববাসীর ‘নানারবাড়ি’ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। ‘বীচ ওয়াকওয়ে নির্মিত হলে সৌন্দর্য্য বাড়লে কক্সবাজারের প্রতি মোহিত আরো অনেক পর্যটক এখানে আসবে।’
জানা গেছে, আগামী জানুয়ারি থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শুরু হবে এই ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণকাজ। এছাড়াও পর্যটন শহরের প্রবেশদ্বার নামে পরিচিত কলাতলী মোড়কে সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে। নেয়া হয়েছে সৌন্দর্যবর্ধন নানা প্রকল্প। এখানে বসে পর্যটকরা নিজের সঙ্গীকে নিয়ে সমুদ্র দেখতে দেখতে মনের আনন্দে কপি ও চা পান করতে পারবে।

 

অনুকূল আবহাওয়ায় মুক্ত আকাশে বসে মোবাইল ও ল্যাপটপ ব্যবহার করতে পারবে। ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধায় থাকছে ফ্রি ওয়াইফাই জোন। সব মিলিয়ে সৈকতে আসা পর্যটকরা পাবে আলাদা সুযোগ-সুবিধা।
কউক চেয়ারম্যান কর্নেল (অব:) ফুরকান আহমদ জানান, কক্সবাজারকে বিশ^মানের উন্নত পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তোলার কার্যক্রম এর মাধ্যমে শুরু হলো।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়া জানান, ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফাইল প্রসেস হচ্ছে। চূড়ান্তভাবে পাস হলেই কাজ শুরু হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হতে ৬ মাস লাগতে পারে।

 

তার মতে, সৈকতকে আরো দৃষ্টিনন্দন ও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। সাগরকূল ঘেঁষে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পর্যটকদের বিনোদনমাত্রা আরো অনেক গুণে বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

এ এস / জি এম এম / রাজীব প্রিন্স :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!