কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে দখলবাজি চলছেই

একদিকে উচ্ছেদ, অন্যদিকে দখল

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে একদিকে উচ্ছেদ হলেও অন্যদিকে চলছে সরকারি জমি দখলের মহোৎসব। প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চিহিৃত দখলবাজচক্র সুগন্ধা পয়েন্টের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করে যাচ্ছে অবৈধ স্থাপনা।

গত কয়েকদিন ধরে সুগন্ধা পয়েন্টের দক্ষিণ পাশে কলাতলীর দখলবাজ আব্দুল্লাহ আল মামুন মিটনের নেতৃত্বে সরকারি প্রায় এক একর সরকরি জমি দখল করা হয়েছে। সেই জমির চারপাশে লোহার পাইপ দিয়ে স্থাপন করা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। প্রশাসনের কঠোরতা, দখলবাজদের আটক ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার পরও দখলবাজি না থামায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে সচেতন মহলের মাঝে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টে গত নয় বছর ধরেই চলছে একের পর এক সরকারি জমি দখল। সমানতালে চলেছে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান ও জেল-জরিমানাও।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে আরও জানা যায়, সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তর-দক্ষিণে এসব সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে দখলবাজরা ৯ বছরে মহামান্য হাইকোর্ট ও কক্সবাজর বিজ্ঞ আদালতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও সদর সহকারী কমিশনারকে বিবাদী করে দায়ের করেছিল একাধিক রিট পিটিশন ও মামলা। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি রিট পিটিশনের রায় সরকারের পক্ষে যায়।

চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসন ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ৫২টি অবৈধ স্থাপনার মধ্যে ৪০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। সেখানেও যুবদল নেতা আলাউদ্দিন রবিনের নেতৃত্বে রয়ে যায় ১২টি স্থাপনা। যেখানে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের উচ্ছেদের ছোঁয়া লাগেনি। ফলে এটি নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে ১৭ অক্টোবর উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা বাদি হয়ে ৫৩ জন দখলবাজের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বেশ কয়েকজন আসামিও আটক হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টের দক্ষিণ পাশে যে সরকারি জমি দখল করে আব্দুল্লাহ আল মামুন মিটন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন, সেই জমির মাঝখানে মহামান্য আদালতের ৩৬৩/১৬ মামলার ১০ এপ্রিল অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশের একটি সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়। তবে কয়েকদিন আগে সদর এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে সেখান থেকে সাইনবোর্ডটি অপসারণ করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টের ড্রাগন মার্কেটের পাশে মিটনের নেতৃত্বে সরকারি জমিতে রাতে-দিনে অবৈধ দোকান নির্মাণের লক্ষ্যে লোহার পাইপ ও খুঁটি বসিয়ে এক একরের মতো সরকারি জমি ঘেরাও করা হচ্ছে। সেখানে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মানের কাজও। চলছে দোকান নির্মান করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়ঁতারা।

এসব অভিযোগের বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন মিটন বলেন, ‘এই জমি আমার। এই জমিতে আমার মামলায় উচ্ছেদ অভিযান না চালাতে জেলা প্রশাসক ও সদর এসিল্যান্ডকে অন্তরবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মামলার ১০ এপ্রিলের আদেশের সাইনবোর্ড ২০১৭ সালের অক্টোবর জমিতে একইভাবে স্থাপন করেছিলাম। এই আদেশ না মেনে তৎকালীন এসি ল্যান্ড নাজিম উদ্দিন গায়ের জোরে আমার স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করেছিলেন।’

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার সুইটি বলেন, ‘সুগন্ধা এলাকায় কোন প্রকার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে দেয়া হবে না। যদি কেউ এখনও করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!