কক্সবাজার উপকূলে ভেসে এল আরও পাঁচ জেলের লাশ

বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়ায় উল্টে যাওয়া ট্রলারের আরও পাঁচ জেলের লাশ ভেসে এসেছে কক্সবাজার উপকূলে। এ নিয়ে ট্রলারডুবিতে মৃতের সংখ্যা বাড়লো ১১ জনে।

এর আগে বুধবার সকালে শহরের সি-গাল সমুদ্র পয়েন্ট থেকে ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় ভোলা জেলার চরফ্যাশন এলাকার ওয়াজেদ উদ্দিনের ছেলে জুয়েল (১৭) ও মকবুল আহমদের ছেলে মনির আহমদ ওরফে জুয়েল মাঝি (৩৮) জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জীবিত উদ্ধার হওয়া জেলে মনির আহমদ ওরফে জুয়েল মাঝি জানান, ৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ভোলা চরফ্যাশনের শামরাজ ঘাট থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ট্রলার নিয়ে তিনি সাগরে যান। তারা মোট ১৪ জন ওই ট্রলারে ছিলেন। গত ৬ জুলাই (শনিবার) ভোরে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি থেকে ছিটকে পড়েন তারা। পরে ট্রলারটিও উল্টে যায়। এরপর কে কোথায় হারিয়ে গেছে তা জানা যায়নি। কিন্তু ট্রলার ধরে রাখেন অনেকে। ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলারটি বারবার উল্টে যায়। তবুও তারা ট্রলার ধরে রাখার চেষ্টা করেন। ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলার থেকে ছিটকে পড়ে আবার ধরেন। তবে এই সময় প্লাস্টিকের বেশ কয়েকটি পানির বোতল ড্রামের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন তারা। দুয়েকটি বোতলে পানি রেখে বাকি সব বোতলের পানি ফেলে দেন। এতদিন ওই পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন তারা।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসাইন জানান, ‘বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার ও মহেশখালীর সমুদ্র উপকূলে ভাসমান অবস্থায় তিন জেলের লাশ পাওয়া যায়। এর মধ্যে সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্ট থেকে দুজন, মহেশখালীর হোয়ানক ও কুতুবজোম এলাকা থেকে দুজন এবং কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সবমিলিয়ে ট্রলারটিতে থাকা জেলেদের মধ্যে ১১ জনকে মৃত পাওয়া গেল।’

নিহতদের মধ্যে ৭ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন ভোলা জেলার চরফ্যাশন রসুলপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের আসমান পাটোয়ারীর ছেলে শামছুদ্দিন পাটোয়ারী (৪৫), পূর্ব মাদ্রাজ এলাকার আব্দুস শহীদের ছেলে মোহাম্মদ বাবুল (৩২), উত্তর মাদ্রাজ এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে মোহাম্মদ মাসুদ (৪৫), একই এলাকার বুজুগ হাওলাদারের ছেলে আজি উল্লাহ ওরফে মনির (৩৮), মোহাম্মদ নুরের ছেলে অলি উল্লাহ (৫০), রসুলপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শষীবিষন এলাকার মুসলিম বলির ছেলে জাহাঙ্গীর বলি (৪০) এবং পূর্ব মাদ্রাজের মো. তরিক মাঝির ছেলে কামাল হোসেন (৩৫)। লাশগুলো কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!