অপেক্ষার পালা শেষ। আর মাত্র দুই দিন পরেই শুরু হচ্ছে সনাতন সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে যেভাবে কক্সবাজারের মন্দিরে মন্দিরে শুরু হয়েছে সাজসজ্জ্বা তেমনিভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নানা আয়োজন আর বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে কড়া নাড়ছে দুর্গোৎসবের আনন্দের বারতার।
শুধু সনাতনী সম্প্রদায় নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই বাংলাদেশে সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে এ দুর্গোৎসব একটি সামাজিক উৎসবও বটে। অন্যদিকে শেষ মুহূর্তে কারিগরের তুলির আঁচড়ে পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে মা দুর্গা প্রতিমা। শুধু মা দুর্গা প্রতিমা নয়, প্রতিমা শিল্পীর তুলির আঁচড়ে মা দুর্গার পাশাপাশি শিল্পীর ছোঁয়ায় প্রতিটি প্রতিমা ফুটে উঠছে স্বমহিমায়। সুন্দর করে তোলা হচ্ছে গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মহিষাসুরের প্রতিমাও।
এবার কক্সবাজার জেলায় প্রতিমা ও ঘটসহ মোট ২৯৬টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজাকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন (সকল আইনশৃংখলা বাহিনী), কক্সবাজার জেলা, উপজেলা ও পৌর পূজা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি।
এদিকে দুর্গোৎসবকে সামনে পুরো জেলায় উৎসবমূখর পরিবেশে পূজা উদ্যাপনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আর পূজাকে সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ইতোমধ্যে পূজা উদ্যাপন পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, কক্সবাজার পৌর কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। গত ২৯ সেপ্টেমম্বর শুভ মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন তথা দেবীপক্ষের।
পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দুর্গা মহালয়ার দিন পা রাখেন মর্ত্যলোকে। তবে আগামী ৪ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
এদিকে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিজয়া দশমীতে লক্ষাধিক মানুষের মিলনমেলা হবে আশা প্রকাশ করেছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা। তাদের আশা কক্সবাজার ছাড়াও এর আশপাশের জেলা ও উপজেলার শতাধিক প্রতিমা একসঙ্গে কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগরে বিসর্জন হবে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, ‘এবছর প্রতিমা ও ঘট মিলে জেলার মোট ২৯৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে সব অত্যাচার-অনাচার থেকে রক্ষা পাওয়াসহ বিশ্ববাসীর কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করা হবে দুর্গাপূজায়। পাশাপাশি অতীতের ন্যায় এবারও জেলাব্যাপি উৎসবমূখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদ্যাপন করার ক্ষেত্রে সর্বস্তেরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।’
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ বলেন, ‘সবার জন্য মঙ্গল আর সুন্দর একটি বছরের বার্তা নিয়ে দেবী দুর্গার ধরায় আগমণ এমনটি প্রত্যাশা সবার। আশা করছি, সবার সহযোগিতায় আমরা জাতিধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে একত্রে মিলিত হয়ে নির্বিঘ্নে এবং অত্যন্ত সফল ও সুন্দরভাবে এবারের পূজা পালন করতে পারবো।’
পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম জানান, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসবকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এএইচ