কক্সবাজারে মাস্ক ব্যবহার বেড়েছে, সঙ্গে অতিরিক্ত দামও

চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৩ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশে করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দেশের অন্যান্য স্থানের মতো কক্সবাজার জেলার মানুষও প্রায় আতঙ্কিত। জেলার সর্বত্র বেড়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। হাঁচি-কাশিতে ছড়ানো এ রোগ থেকে সুরক্ষা পেতে কক্সবাজারে হঠাৎ কয়েকগুণ বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার।

এ ভাইরাসের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করতে কক্সবাজারের অধিকাংশ মানুষ মরিয়া হয়ে ছুটছেন ফার্মেসিসহ মাস্ক পাওয়া যায় এমন সব দোকানে। কেউ প্রত্যাশিত মাস্কটি পাচ্ছেন আবার কেউ পাচ্ছেন না। পেলেও সেটি কিনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়ে। এ অবস্থায় মাস্কের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৯ মার্চ) সদরে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে মাস্কের অতিরিক্ত দাম নেওয়ায় প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরফাত হোসাইনের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শহরের পুরান পানবাজার রোডের আল নিজাম মার্কেটেস্থ নুর সার্জিকেল নামের একটি দোকানে মাত্রাতিরিক্ত দামে মাস্ক বিক্রির অভিযোগে ভোক্তা অধিকার আইনে অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।

সোমবার সকাল ও বিকেলে শহরের পৌরসভা মার্কেট, পানবাজার, হাসপাতাল সড়ক, বাজারঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকটি দোকানে সরেজমিনে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে করোনাভাইরাস আতঙ্ককে ইস্যুকে করে এক শ্রেণির সুযোগ সন্ধানী মুনাফালোভী ব্যবসায়ী ক্রেতাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। প্রতিটি মাস্কের দাম দুই থেকে তিনগুণ বেশি রাখছেন তারা। আবার কেউ কেউ এক মাস্কের দাম নিচ্ছেন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্তও। যা আগে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ছিল।

লালদিঘীর পাড় এলাকায় ভাসমান দোকানদার লোকমান হাকিম জানান, করোনাভাইরাস আতংকে মানুষের মাঝে মাস্ক ব্যবহারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পাইকারী বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় খুচরা পর্যায়ে তাদেরও কিছুটা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানবাজার সড়কের এক ফার্মেসি মালিক বলেন ‘করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উদ্বেগে বাজারে মাস্কের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। আগে সার্জিক্যাল মাস্ক প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হতো। এখন তা ৮০ থেকে ১২০ টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

এ সময় একইস্থানে কথা হয় কাসেম নামের এক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস আতংকে মাস্কতো ব্যবহার করতে হবেই। তাই দাম যাই হোক নিতে তো হচ্ছেই।’

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরফাত হোসাইন বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা সংকটময় মুহূর্তকে পুঁজি করে বেশি দামে মাস্ক বিক্রি করছিলেন, এমন খবরে আমরা বাজারে অভিযানে নেমে এর সত্যতা পেয়েছি। জানতে পারি ১০-২০ টাকার একটি মাস্ক ২৫০ টাকা দামে পর্যন্ত বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। মাস্কের বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরফাত হোসাইন।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!