কক্সবাজারে থামছে না ইয়াবা পাচার, ২০ দিনে ‌‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৮

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিলেও কিছুতেই কমছে না মাদকের চোরাচালান। কক্সবাজারে গত ২০ দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দেশের শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার হাজী সাইফুল করিমসহ নিহত হয়েছে ৮ ইয়াবা কারবারি। এরপরও নানা কৌশলে ইয়াবা ব্যবসা চালু রয়েছে। পেটের ভিতর ঢুকিয়ে কিংবা পায়ুপথ দিয়ে ইয়াবা পাচারের ঘটনাও ঘটছে।

গত ৩০ মে দিবাগত রাতে টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী হাজী সাইফুল করিম (৪৫)। সাইফুল নিহত হওয়ার পর ইয়াবা চোরাচালান কমে আসবেবলেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু নানা কৌশলে মাদক ব্যবসা সচল রয়েছে।

সাইফুল করিম ছাড়াও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ কক্সবাজার শহর ও টেকনাফের বেশ কয়েকজন চিহিৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। ১৬ জুন টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ঢালা এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় তিন ইয়াবা কারবারি।
এরা হলো কক্সবাজার পৌরসভার চৌধুরী পাড়ার গনি সোলতানের ছেলে দিল মোহাম্মদ (৪২), একই এলাকার মো. ইউনুছের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২২) ও চট্টগ্রামের আমিরাবাদের মাস্টার হাট এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪২)।

একইদিন সরকাল ৭টার দিকে ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের জঙ্গলের পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শহরের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের (৩৮) গুলিবিদ্ধ লাশ।
১৫ জুন টেকনাফে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. রাসেল মাহমুদ নামের নারায়ানগঞ্জের এক মাদক ব্যবসায়ী, ১০ জুন সোমবার ভোরে বিজিবির সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হুীলা জাদিমুড়া নাফ নদী সীমান্তে মাদক কারবারি ও ৩ জুন সোমবার ভোরে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়া কাটাখালী গ্রামের সাবেক গোলাম আকবরের পুত্র মুফিজুর রহমান (৪০) নিহত হয়।

জানা যায়, বিশেষ কায়দায় স্কচটেপ পেঁচিয়ে ইয়াবার ছোট প্যাকেট করা হয়। পরে সেই প্যাকেট কলায় ঢুকানো হয়। আর সেই কলা না চিবিয়ে গিলে ফেলা হয়। আবার কিছু প্যাকেট পিচ্ছিল করে পায়ুপথ দিয়ে পেটে ঢুকানো হয়।
২১ মে টেকনাফে তিন নারীর পেটের ভেতর থেকে তিন হাজার ১৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে বিজিবি। এক্স-রে করে কাল রঙের স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় পেটের ভেতরে মাদকের বড়ি উদ্ধার করে বিজিবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজারের এক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, এই প্রক্রিয়ায় ইয়াবা পাচারে মৃত্যুও হতে পারে। মানুষের পাকস্থলি খাবার হজমের জন্য যে রস থাকে সেটি ইয়াবা বড়িকেও গলিয়ে ফেলতে পারে। কোনো কারণে একটু বেশি সময় পেটে থাকলেই এই ঝুঁকি তৈরি হয়।

র‌্যাবের কক্সবাজার-১৫ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‌বর্তমানে নানা কৌশল অবলম্বন করে ইয়াবা পাচার হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া পেট তল্লাশি করা সম্ভব নয়।

আরএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!