কক্সবাজারে ঢাকার সেই তরুণী ধর্ষিত হয়েছিলেন কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ

কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করা ঢাকার তরুণী স্বর্ণা রশিদের মৃত্যু কিভাবে হল— এ নিয়ে সন্দেহে রয়েছে কক্সবাজারের পুলিশ। অতিরিক্ত ইয়াবা সেবনে মৃত্যুর কথা লোকমুখে ছড়ালেও মৃত্যুর আগে ওই তরুণী বন্ধুদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখতে চায় পুলিশ।

মৃত্যুর কারণ বের করতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ইতিমধ্যে স্বর্ণার ময়নাতদন্ত হয়েছে। কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক খায়রুজ্জামান বলেছেন, ‘ময়নাতদন্তে শুধু ইয়াবা সেবন নয়, তিনি বন্ধুদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছেন কি না তার আলামতও সংগ্রহ করেছেন চিকিৎসকরা।’

জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী জানান, ‘২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর মেয়েটিকে জরুরি বিভাগে যখন আনা হয় তখন আমি তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিটে ভর্তি দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ঢাকায় ফিরে যাবার কথা বলে সিটে ভর্তি না হয়ে ফিরে যান হোটেল কক্ষে।’

ডা. শাহীন আরও বলেন, ‘সঙ্গীরা মাদকসেবী মেয়েটিকে নিয়ে যাবার বেশ কিছুক্ষণ পর আবারো হাসপাতালে আসেন। তখন রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা। ডা. শাহীন মেয়েটিকে পরীক্ষা করে দেখেন ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়েছে।’

২০ ডিসেম্বর কক্সবাজার শহরের কলাতলীর হোটেল জামানের ৩০১ নম্বর কক্ষে উঠেন স্বর্ণা-ওয়ালীসহ অন্য বন্ধুরা। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমিক ওয়ালী আহমদ খানের রাগ ভাঙ্গাতে বাল্যবন্ধুদের সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে এসে অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করে মৃত্যু হয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিলের এ লেভেলের ছাত্রী স্বর্ণা রশিদের। ২২ বছর বয়সী এই তরুণী মাঝেমধ্যে টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করতেন।

তবে স্বর্ণার মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছে, পরিবারের সাথে কথা কাটাকাটির কারণে স্বর্ণা কক্সবাজার চলে এসেছিলেন। আবার আরেক সূত্র বলছে, প্রেমিক ও বন্ধুদের আড্ডায় বসে আবেগের তাড়নায় অতিরিক্ত ইয়াবা সেবনই স্বর্ণার মৃত্যুর কারণ।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে স্বর্ণার বাবা ঢাকা কোতোয়ালী চকবাজারের ৭ নম্বর বেগমবাজার এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হারুন উর রশিদ পাপ্পু মেয়ের লাশ নিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত বিষয়টি কক্সবাজারের টক অফ দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।

অন্যদিকে স্বর্ণাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সহপাঠীদের অনেকেই পালিয়ে গেলেও পুলিশ তার কথিত প্রেমিক ব্রিটিশ কাউন্সিলের এ লেভেলের ছাত্র ওয়ালী আহমদ খানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। ওয়ালী ঢাকার চকবাজার এলাকার ২২ সিদ্ধেশ্বরী রোডের মনিজান টাওয়ারের বাসিন্দা আলী রেজা খান ছেলে। শনিবার ওয়ালী আহমদকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শরীফ উল্লাহ শরীফ।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!