কক্সবাজারে জলকেলি উৎসব

শেষ হলো রাখাইন সম্প্রদায়ের তিন দিনের মাহা সাংগ্রাইং (পোয়ে বা জলকেলি উৎসব)। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) পুরোনো বছরের হতাশা ও ঘোর অন্ধকার মাড়িয়ে সমৃদ্ধ জীবনের প্রত্যাশায় এই উৎসব সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়। সমাপনী দিনে রাখাইন তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠে বর্ণিল আনন্দে। পরস্পরের মাঝে মঙ্গলময় জল ছিটিয়ে পুরনো দিনের জীর্ণতা ধুয়ে মুছে নতুনকে জানিয়েছেন তারা।

জলকেলি প্যান্ডেল ঘুরে দেখা যায়, টেকপাড়া, হাঙর পাড়া, কাজী অফিস সংলগ্ন কবি নজরুল সড়ক, পূর্ব-পশ্চিম মাছবাজার, ক্যাং পাড়া ও বৈদ্যঘোনাস্থ থংরো পাড়ায় রাখাইন সম্প্রদায়ের তরুণ তরুণীরা বাদ্য বাজনার তালে তালে দল বেঁধে এক প্যান্ডেল থেকে আরেক প্যান্ডেলে ছুটেছে। এ সময় উৎসবের বর্ণিল আবহ বিরাজ করে । উৎসবে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীসহ পর্যটকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি রাখাইন পল্লীগুলোত সৃষ্টি হয় সম্প্রীতির মেলবন্ধন।

প্রসংগত, পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে ১৩৮১ নববর্ষকে বরণ করার জন্য রাখাইন সম্প্রদায় এই উৎসব পালন করেছে। রাখাইন ভাষায় এ উৎসবকে বলা হয় মাহা সাংগ্রাইং পোয়ে বা রিং ল। এর বাংলা আভিধানিক অর্থ মৈত্রিময় বিচ্ছুরণ। এটি স্থানীয়দের মাঝে পানিখেলা নামেই বেশি পরিচিত। শহর ছাড়াও মহেশখালী, টেকনাফ সদর, হ্নীলা চৌধুরী পাড়া, রামু, পানিরছড়া, চকরিয়ার মানিকপুরসহ রাখাইন অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সপ্তাহজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে নববর্ষ উদযাপন চলছে।

কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যথিং অং ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পুঁ চ নু বলেন, ‘সাংগ্রে পায় বা জলকেলি রাখাইনদের সামাজিক উৎসব। সময়ের আবর্তে এই উৎসব সর্বজনীন অনুষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। সুষ্ঠুভাবে এই উৎসব শেষ করতে পেরে রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের কাছে বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ।’

পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘রাখাইনদের জলকেলি উৎসবে ব্যাপক নিরাপত্তা ছিল। কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা হয়নি।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!