‘ওয়াসার কাজ যেন জনগণের জীবনযাত্রায় বাধা না হয়’

ওয়াসার চলমান উন্নয়ন কাজ যেন জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকে কঠোর দৃষ্টি দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহর নিকট আহ্বান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা যেমন গড় বিল, ভুতুড়ে বিল, অনিয়মিত পানি সরবরাহ, পানির মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি এবং সম্প্রতি আলোচিত উগান্ডা সফর নিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির সাথে তার দপ্তরে খোলামেলা মত বিনিময় করেন।

ওয়াসার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘সম্প্রতি ওয়াসার যত্রতত্র রাস্তা খুড়াখুড়ি নগরবাসীর যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সড়কে ওয়াসা খোঁড়াখুড়িকেন্দ্রিক যানজট নগরবাসীর সে দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।’

এ কারণে অন্ততঃ প্রধান সড়কের পাইপ লাইন স্থাপনের কাজগুলো দিনের পরিবর্তে রাতে করার জন্য ওয়াসার এমডির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এছাড়া ওয়াসার সংস্কার কাজ শেষে রাস্তাগুলো দ্রুততার সাথে মেরামত করে চলাচল উপযোগী করার জন্য চসিক মেয়রের প্রতি অনুরোধ জানান সুজন।

তিনি আরো বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে এখনো পর্যন্ত ওয়াসার সঞ্চালন লাইন নাই। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়াসার পানি সরবরাহ নাই; কিন্তু প্রতিনিয়ত ভুতুড়ে বিলের বোঝা বহন করতে হচ্ছে গ্রাহককে। একদিকে ওয়াসার পানি নাই অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে ওয়াসার এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে অসাধু ব্যবসায়ীরা গ্যালনে ভরে প্রতিনিয়ত ওয়াসার পানি বিক্রির ব্যবসা করছে।’

তিনি ওয়াসার এমডিকে জনগণের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে পানির মূল্যবৃদ্ধি গ্রাহকদের সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য অনুরোধ জানান। সুজন গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক একটি হটলাইন নাম্বার চালুর পরামর্শ দেন এবং দ্রুততার সাথে ওয়াসার অসমাপ্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কাজ সমাপ্ত করে সরকারের উন্নয়নের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান।

এ সময় ওয়াসার এমডি একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘নগরবাসীর জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে কাজ করছে ওয়াসা। বর্তমানে ১০০ বছরের মহা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে এ সংস্থা। এ লক্ষ্যে সাড়ে ৬০০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ চলমান। এতো বৃহৎ উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করতে গিয়ে নগরবাসীর দুঃখ আমি ব্যাক্তিগতভাবে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করি। এ কথা সত্যি যে, চট্টগ্রামের মানুষের সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার যে উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছে অন্য কোন সরকার সে রকম কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেনি।’

সাম্প্রতিক আলোচিত উগান্ডা সফর নিয়ে ফজলুল্লাহ বলেন, ‘উগান্ডার কামপালা শহরটি বর্তমানে পানি সরবরাহে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ইতিমধ্যে ঐ শহরে প্রিপেইড মিটারে পানি সরবরাহ চালু হয়েছে। আর যেহেতু শহরটি বাংলাদেশের পর্যায়ের সেহেতু বিশ্বব্যাংকের পরামর্শেই উগান্ডায় গিয়েছে প্রতিনিধিদল।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী ইয়াকুব সিরাজউদদৌল্লাহ, মো. ইলিয়াছ, সংগঠনের সদস্য সচিব মো. হোসেন, আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল আজিম, এজাহারুল হক, মো. শাহজাহান, দেলোয়ার হোসেন সিরাজ, শিশির কান্তি বল, শেখ মামুনুর রশীদ, এএসএম জাহিদ হোসেন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সোলেমান সুমন, সমীর মহাজন লিটন, জাহাঙ্গীর আলম, নাছির উদ্দিন, সফি আলম বাদশা, স্বরূপ দত্ত রাজু, হাসান মোঃ মুরাদ, সরওয়ার্দী এলিন, রকিবুল আলম সাজ্জী, ওয়াসিম উদ্দিন, হাসান মুরাদ, সালাউদ্দিন জিকু, গিয়াস উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!