বৃষ্টি হলে কাদা, বৃষ্টি না হলে ধুলোয় নাকাল নগরীতে বসবাসকারীরা। ওয়াসার খোঁড়াখুড়ির কারণে নগরের প্রধান ও অলিগলির সড়ক ক্ষত-বিক্ষত। বর্ষা শেষে আবার কাটাকাটি শুরু হয়েছে। ফলে যানচলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়ে নগরীতে হয় যানজট।
৬ বছর আগে থেকে ওয়াসার কাটাকাটি শুরু হয়ে এখনও চলছে। এর মধ্যে ছয় কিলোমিটার সড়ক কাটা হয়েছে। আরো প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক কাটবে সংস্থাটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুধবার (২৮ আগস্ট) জামাল খান, সার্সন রোড, ডিসি হিলের সামনের সড়ক, চকবাজার গণি বেকারি, কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশ, মির্জাপুল, নন্দনকাননসহ নগরের অনেক সড়কে চলছে কাটাকাটি। জামালখান ক্যাথলিক চার্চের সামনে হয়ে গণি বেকারি সংযোগ সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ডিসি হিলের সামনের সড়ক, চকবাজার, মির্জাপুল সড়কে নাকে কাপড় গুঁজেও চলা দায়। পথচারীরা মুখে কাপড় চেপে ধরে চলাচল করছে। ধুলো উড়ছে সবখানে। আবার বৃষ্টি হলে কাঁদায় মাখামাখি হয়ে পা ফেলা দায় হয়ে পড়ে। কাটাকাটি চলা অংশের পাশে পড়ে আছে বালি, ইটের খোয়া, স্কেভেটর,পাম্প মেশিন, শাবল, কোদাল।
রাত হলেই শুরু হয় কাটাকাটি। তখন অনেক সড়কের একপাশ বন্ধ রাখা হয়। এতে মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়ে। কাটা সড়কে বালি দেওয়া স্থানে চাকা দেবে ও গর্তে গাড়ি পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনাও।
একাধিক চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, সড়ক বন্ধ হয়ে সংকীর্ণ হওয়ার কারণে যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে ট্রিপ কমেছে, আয়ও কমে গেছে। এছাড়া ধুলোবালি তো আছেই।
নগরীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পুরাতন পাইপ স্থাপনের জন্য ৬৫০ কিলোমিটার ও প্রায় ৫০ হাজার নতুন সংযোগ দেওয়া হবে। নভেম্বরের দিকে এই প্রকল্প শুরু হয়ে ২০২০ সালও শেষ হতে পারে। ১০ বছরে মেগা প্রকল্পের মধ্যে ৬টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটির কাজ শেষ হতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত লাগতে পারে।
ওয়াসার তদারকির অভাবের জন্য সাধারণ মানুষ ও কাউন্সিলররা বিভিন্ন সময় বিরক্তি প্রকাশ করেন। মানুষ উন্নয়ন চায় তবে তা সাধারণ মানুষের ভোগান্তি করে নয়।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘ওয়ার্কঅর্ডার অনুযায়ী ছোট প্রকল্প ২০২২ ও বড় প্রকল্পগুলো ২০২০ এর মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। নাগরিক দুর্ভোগ ও ধুলোবালির জন্য পানি ছিটানোর ব্যাপারে আমি ঢাকা থেকে এসে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলব।’
চট্টগ্রাম মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ধুলোবালি মানুষের ফুসফুসে জমে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট হতে পারে। শিশু ও যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে তাদের জন্য ধুলোবালি বেশি ক্ষতিকর।’
সমাজকর্মী জিকরুল হাবিবিল ওয়াহেদ বলেন, ‘সড়কের কাটাকাটির যেন শেষ নেই। সারা বছর কাটছে সড়ক। উন্নয়ন দরকার তবে তা জনদুর্ভোগ করে নয়। শুকনো সময়ে ধুলো বৃষ্টির সময়ে কাঁদায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।’
সিএম/এসএস