ওসি কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এবার ব্যবসায়ী ফাঁসানোর মামলা, আসামি ১৪ পুলিশসহ ১ সোর্স

চাঁদা না পেয়ে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে জেল খাটানোর অভিযোগে বায়েজিদ থানার সাবেক ওসি মো. কামরুজ্জামানসহ ১৪ পুলিশের নামে মামলা করেছেন মো. রুবেল নামের বায়েজিদ এলাকার এক ব্যবসায়ী।

বৃহস্পতিবার (২২সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম দ্বিতীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলিউল্লাহর আদালতে রুবেল বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন এসআই মো. মনিরুল ইসলাম, এসআই আজাহার ইসলাম আজাহার, এসআই মো. রবিউল ইসলাম, এসআই কেএম নাজিবুল ইসলাম তানভীর, এসআই কাজী মো. তানভীরুল আজম, এসআই বশির গাজী, এসআই আসাদুর রহমান, এএসআই সাহাদাত, এএসআই সৈয়দ আবুল হাশেম, এএসআই মো. সাইফুল ইসলাম, এএসআই মো.আবদুল মালেক, এএসআই লিটন শীল, এএসআই রবিউল ও পুলিশের সোর্স মো. শাহজাহান ওরফে আকাশ।

মামলার আসামিদের মধ্যে পুলিশের সোর্স আকাশ ছাড়া বাকি ১৪ জনই তৎকালীন বায়েজিদ থানায় দায়িত্বরত ছিলেন।

মামলার বিষয়ে বাদি মো. রুবেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি একজন কাপড় ব্যবসায়ী। আমার কাছ থেকে ওসি কামরুজ্জামান তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মাদক ও অস্ত্র আইনের মিথ্যা মামলায় জেল খাটায়। তাই আমি এই অন্যায়ের বিচার চেয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর মামলার বাদি বায়েজিদ থানার রৌফাবাদ এলাকায় একটি জায়গা কিনতে গেলে তৎকালীন ওসি কামরুজ্জামান রুবেলের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই টাকা না দিলে জায়গাটি কিনতে পারবে না এবং ঘরও বানাতে পারবে না বলে হুমকি দেয়। এছাড়া টাকা না দিলে রুবেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হয়।

এরপর গত ২৩ ও ২৫ নভেম্বর আমিন জুটমিল এলাকায় রুবেলের ঘরে গিয়ে টাকার জন্য হুমকি দেয় বায়েজিদ থানার পুলিশ। এ সময় টাকা না পেয়ে ঘরের জিনিসপত্র ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে আসারও অভিযোগ করা হয় এজাহারে।

সর্বশেষ ২৫ নভেম্বর রৌফাবাদ এলাকার বাগদাদ হোটেল থেকে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের উদ্দেশ্যে লিংক রোড এলাকায় নেওয়ার পথে আরিফকে ম্যাসেজ দিয়ে জানায় রুবেল। এরপর তাকে আবার হোটেলে ফেরত আনা হয়। এরপর এসআই কেএম নাজিবুল ইসলাম রুবেলের পকেটে এক হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে এবং সোর্স আকাশ পুলিশের গাড়ি থেকে একটি দেশীয় এলজি পিস্তল এনে রুবেলের কাছে দেয়। পরে বায়েজিদ থানা পুলিশ বাদি হয়ে রুবেলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক মামলা করে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, রুবেলকে থানায় আনার পর ওসি ছাড়া বাকি আসামিরা বিভিন্ন সময়ে রুবেলের ঘরে গিয়ে জিনিসপত্র ভাঙচুর, নগদ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার লুট করে এবং সিসিটিভির হার্ডড্রাইভ নিয়ে আসে।

পুলিশের করা সেই মামলায় ৯ মাস ২২ দিন কারাগারে থাকার পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হন রুবেল।

এর আগে ছাত্রদল নেতাকে গুলি করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে বায়েজিদের সাবেক ওসি কামরুজ্জামানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী সাইফুলের মা ছেনোয়ারা বেগম।

চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার সত্যতা যাচাইয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!