‘ওপরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট’—এমন প্রবাদবাক্য যেন পুরোপুরি পেয়ে বসেছে চট্টগ্রাম নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোড, সিটি কলেজ মোড়সহ পুরো সদরঘাট এলাকাকে। প্রায় শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ ও হাসপাতাল নিয়ে গড়ে উঠা ব্যস্ত এ এলাকাটিতে যানজট, গাড়ির কালো ধোঁয়া। সেই সঙ্গে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পে নগরীর উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ‘খেয়ালিপনায়’ ওই পথে চলাচলকারী জনসাধারণের মাঝে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেমন হাসপাতাল মোড়, ইসলামিয়া কলেজের সামনের সড়ক, আলকরণ মোড়, ফিরিঙ্গি বাজারসহ সদরঘাটের বেশ কয়েকটি স্থানে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির পর ইট, বালি ও মাটির স্তূপ জমিয়ে রেখেছে ওয়াসা। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় বাতাসে উড়ছে ধুলোবালি।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকাটির বিভিন্ন মোড়ে বেশ কয়েক দফা খোঁড়াখুঁড়ি করছে ওয়াসা। ওয়াসার ভাঙ্গাগড়ার এমন কাজে সৃষ্ট ধূলার ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং ওই পথে চলাচলকারী জনসাধারণের নিত্যদিনের জীবন-যাপন।
সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদের চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটা কী ধরনের উন্নয়ন বুঝতে পারছি না। ধুলাবালির জন্য থাকা যাচ্ছে না। অনেকে উল্টা বয়ান দেয় জনগণকে সচেতন হওয়ার।’
এছাড়াও ধুলাবালি নিজের জাত চেনাতে অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে রোগব্যাধির প্রকোপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীত মৌসুমে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ধুলোবালিজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে রোগজীবাণুমিশ্রিত ধুলা ফুসফুসে প্রবেশ করে। এই ধুলা ফুসফুসের ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, শ্বাসজনিত কষ্ট, হাঁপানি ও যক্ষ্মাসহ নানা জটিল রোগের সৃষ্টি করছে। রাস্তার পাশে দোকানের খাবার প্রতিনিয়ত ধুলায় বিষাক্ত হচ্ছে। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম থাকায় তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
জনসাধারণের এমন ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চেয়ে ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ‘সমন্বয়হীনতার’ কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এলাকার রাস্তাগুলো ঠিকঠাক ছিল। কিন্ত কখনও ওয়াসা আবার কখনও টেলিফোন লাইনের জন্য রাস্তাগুলো বারবার খোঁড়াখুঁড়ি করা হচ্ছে।
সদরঘাটের পার্শ্ববর্তী এলাকা ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক সোলায়মান সেলিম বলেন, ‘আমরা ওয়াসাকে বারবার দ্রুত কাজ শেষ করার তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি। সোমবারও তাদের সাথে বৈঠক হয়েছে।’
এএ/এসএ