এ বছরের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শতভাগ সফলতা অর্জণ করতে হবে : মেয়র

এ বছরের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শতভাগ সফলতা অর্জণ করতে হবে : মেয়র 1
????????????????????????????????????

প্রতিদিন রিপোর্ট  :  সিটি করপোরেশনের মধ্যে নগরীকে শতভাগ আলোকিত করার অংশ হিসেবে সোলার ও নন সোলার প্রকল্পের অধীনে গৃহিত প্রায় ২৮ কোটি টাকার প্রকল্প উত্থাপন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত ৫ম পরিষদের ২১ তম সাধারণ সভায় মেয়র এ কথা বলেন।

সোলার এর আওতায় ২ কি.মি. এলাকায় ১০৩ টি বাতি, নন সোলার এর আওতায় ৫৬ কি.মি. এলাকা জুড়ে ৩০১৭ টি বাতি স্থাপনের বিষয় অবহিত করেন মেয়র।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকাকে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্ণফূলী নদীর তীরে দেওয়াল নির্মাণ,২৫ টি খাল ড্রেজিং করন এবং খালের মুখে পাম্প হাউজ সহ স্ল্যুইস গেইট নির্মাণে ২৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প ছাড়াও ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের ১৯ এপ্রিল ২০১৭ খ্রি. পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব রাজস্ব বরাদ্দ থেকে ই-জিপি’তে প্রকাশিত ৮৯টি প্রকল্পের অধীনে প্রায় ১১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকার খাল ও ড্রেন হতে মাটি উত্তোলন ও অপসারন কার্যক্রম, চসিক এর থোক ও রাজস্ব বরাদ্দ থেকে ৪১ টি ওয়ার্ডে ৪১৬ টি প্রকল্পের অধীনে ১৬০ কোটি ২৩ লক্ষ টাকার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এডিপি এর আওতায় ৫৭ টি প্রকল্পের অধীনে ১৬২ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। দরপত্র আহবানের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

মেয়র বলেন, পরিবেশ বান্ধব, স্বাস্থ্যকর ও বিশ্বমানের বাসোপযুগী নগরী গড়ে তোলার লক্ষে আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় গৃহিত কমসূচীর অধীনে প্রায় ১৭শত নতুন সেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ডোর টু ডোর আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারন কার্যক্রম শতভাগ সফল করার জন্য কাউন্সিলরদের দায়িত্ব নেয়ার আহবান জানান মেয়র।

তিনি বলেন, এ বছরের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শতভাগ সফলতা অর্জণ করতে হবে।তিনি ২০১৮ সনের মধ্যে নগরীকে শতভাগ আলোকিত করার লক্ষ্যে প্রণীত কর্মসূচী সমূহ তুলে ধরেন। এছাড়াও জাইকার আওতায় পোর্ট কানেকটিং রোড, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড,ফ্লাই ওভার, শিক্ষা ভবন নির্মাণ,ওভারপাস নির্মাণ ইত্যাদি প্রকল্প সমূহ সাধারন সভায় উপস্থাপন করেন। মেয়র বলেন, নতুন এ্যাসফল্টপ্ল্যান্ট চালু হলে সিডিএ,ওয়াসা,পিডিবি,টিএন্ডটি, রোডস্ এন্ড হাইওয়ে সহ বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কাজের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সমূহ গুনগতমান সম্পন্নভাবে দ্রুত মেরামত করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, যেখানে গর্ত সেখানেই মেরামত সে নির্দেশনা শতভাগ কার্যকর আছে বলে জানান। মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ড্রেনেজ ও সুয়ারেজ মাষ্টারপ্ল্যান প্রণীত হচ্ছে এ মাষ্টারপ্ল্যানের অধীনে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামবাসী সুফল ভোগ করবে।

এছাড়াও পাওয়ার চায়নার মাধ্যমে ড্রেনেজ মাষ্টারপ্ল্যান প্রণীত হবে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে পাওয়ার চায়না তাদের প্রকল্প প্রস্তাবনা সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করবে। সরকার টু সরকার পদ্ধতিতে এ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়িত হবে।

তিনি বলেন, বন্দরের অর্থায়নে এবছরেই মহেষখালের মুখে পাম্প হাউস সহ স্ল্যুইস গেইট নির্মাণকাজ বাস্তবায়িত হবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, তাঁর দু’বছর সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে যুগান্তকারী পরির্তন সাধিত হয়েছে। মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়াও এ দু’টি সেবায় ভবন নির্মাণ, এ্যাম্বুলেন্স ক্রয় সহ বহুমুখি কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথাকে সর্বোচ্চ সম্মানের সাথে আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৫০ জন গরীব ও অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে তাঁদের নিজস্ব ভিটায় তাঁদের কল্যানে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় “বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবন ” নির্মাণ করে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মাদকমুক্ত নগরী গড়ার লক্ষ্যে আগামী ৩০ এপ্রিল বেলা ১১ টায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইন্সটিটিউট এ পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের নিয়ে কাউন্সিলর ও প্রতি ওয়ার্ড থেকে ৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

সভায় নির্বাচিত পরিষদের সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, অফিসিয়াল কাউন্সিলর সহ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা ও বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নিজস্ব আয় বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ,হাট বাজার ইজারা পর্যালোচনা,চিহ্নিত অবৈধ হাট বাজার ম্যাজিষ্ট্রেট এর মাধ্যমে উচ্ছেদ, আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর মূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ,খেলাধুলার মান উন্নয়ন, শ্রমিকদের জন্য বর্ষাকালীন রেইনকোর্ট ক্রয়, রেডিয়ামযুক্ত হলুদ ইউনিফরম ক্রয়, দূর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি ও সচেতনতা কার্যক্রম জোরদারকরন, ওয়ার্ড ভিত্তিক জঙ্গী প্রতিরোধ কমিটিকে সক্রিয় করন, শিশু বান্ধব নগরী গড়ার লক্ষ্যে চাইল্ড রিসার্চ সেন্টার গড়ে তোলা সহ পথ শিশু ও এতিমদের জীবন মান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, কাট্টলী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে প্রাতঃ শাখা চালু করন, স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে “মডার্ণ ফুড ল্যাব্রেটরী”বিষয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপে পরিচালনায় সুপারিশ গ্রহণ, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিত্যক্ত জায়গায় উদ্যান স্থাপন, বে-আইনীভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দেয়াল লিখন, ডিজিটাল ব্যানার ইত্যাদি উচ্ছেদকরন, যানজট নিরসন সহ নানাবিধ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!