এলইডি বাতিতে আলোকিত হবে চট্টগ্রাম নগর, একনেকে অনুমোদন

চট্টগ্রাম নগরীর সড়কদ্বীপে জ্বলবে ২০ হাজার ৬০০ এলইডি বাতি। আলোকিত হবে পুরো বন্দর নগরীর রাস্তা। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক এবং পথচারীদের জন্য কার্যকর ও টেকসই সড়কবাতির সুবিধা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আর কোনো বাধা থাকলো না।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২৬০ কোটি ৮৯ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকার প্রকল্পটি পাস হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা।

এ বিষয়ে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ জানান, প্রকল্প ব্যয়ের ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ আসবে ভারতীয় ঋণ থেকে এবং অবশিষ্ট ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ আসবে জিওবি (সরকারি অর্থায়ন) থেকে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরীর মূল সড়কে আর কোন পুরনো বাতি থাকবে না।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার সড়ক আলোকায়ন ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন কাজ শীর্ষক এ প্রকল্পের আওতায় ৪০, ৬০, ৯০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের ২০ হাজার ৬০০ এলইডি বাতি এবং ২০ হাজার ২৬৭ জিআই পোল বসানো হবে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬০ কোটি ৮৯ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের গৃহীত এ প্রকল্পের আওতায় ৪১ ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কজুড়ে এলইডি বাতি লাগানো হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও সরকারের নিজস্ব অর্থ দিয়ে। যার মধ্যে ভারত সরকার ঋণ দিচ্ছে ২১৪ কোটি ৪৬ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা এবং জিওবি থেকে ৪৬ কোটি ৪৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকা।

চসিক সূত্রে জানা যায়, চসিক এলাকায় সড়কসমূহের বৈচিত্র্যতার কারণে সব সড়কে আলোর স্তর নিম্নতর। বেশিরভাগ সড়কে প্রায় ৪৮ হাজার ৫৫৭টি টিউব ও এনার্জি বাতি স্থাপিত আছে এবং প্রধান প্রধান সড়ক ও মোড়গুলোতে প্রায় ৪ হাজার ৯৮৬ হাইপ্রেসার সোডিয়াম এবং মেটাল হ্যালাইড বাতি স্থাপিত আছে। বর্তমানে স্থাপিত সড়কবাতির আলোর সুবিধা আধুনিক এলইডি বাতির আলোর তুলনায় পুরনো এবং অপর্যাপ্ত। বিদ্যমান বাতিসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও বেশি।

বর্তমানে ৪০ ওয়াট টিউব বাতি (ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প), ৬৫ ওয়াট এনার্জি বাতি (সিএফএল), ১৫০ ওয়াট হাইপ্রেসার সোডিয়াম, ৪০০ ওয়াট মেটাল হ্যালাইড বাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলোতে বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ অপচয় হয় এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডও বৃদ্ধি করে। যা শহরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রফিক এবং পথচারীদের জন্য কার্যকর ও টেকসই সড়কবাতির আলোক সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে।

রাত্রিকালীন শহরের সৌন্দর্য্য, ব্যবসায়িক সুবিধা, সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। একইসাথে কম কার্বন নির্গমণ এবং শক্তি শোষণ সম্পর্কিত পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রাফিক ও পথচারীর জন্য স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে সড়কবাতির আলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এডি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!