এবার মিয়ানমারের হেলিকপ্টার বাংলাদেশের আকাশে, নাইক্ষ্যংছড়িতে গোলা

মিয়ানমারের হেলিকপ্টার এবার বাংলাদেশের সীমান্তের ভেতরেই ঢুকে পড়ল। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের রেজু গর্জনবুনিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সেই হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গোলা এসে পড়লো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। গোলাবর্ষণের আওয়াজ ও গোলার ভয়ে ওই সময় বিভিন্ন বাগানে কর্মরত শ্রমিকরা পালিয়ে যান।

গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে।
গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (২৮ আগস্ট) সীমান্তবর্তী ইউনিয়নটিতে মর্টার শেল নিক্ষেপ করার পর সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিবাদ করা হয়। কিন্তু মিয়ানমার বাহিনী তাতে কর্ণপাত না করে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সারাদিন সীমান্তে মর্টার শেল নিক্ষেপ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই এলাকাজুড়ে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার চক্কর দিতে থাকে। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকালে ঘুমধুমের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজের বাগানে কিছু শ্রমিক কাজ করছিলেন। হঠাৎ তারা দেখতে পান, আকাশে হেলিকপ্টার উড়ছে। একটু পর তা দ্রুত তাদের বাগানের দিকে আসতে না আসতেই গোলা ছুঁড়তে শুরু করে। এভাবে দুপুর পর্যন্ত গোলাবর্ষণের চলতে থাকলে শ্রমিকরা ভয়ে একপর্যায়ে পালিয়ে যান।

ঘুমধুমের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘মঙ্গলবার মিয়ানমারের একটি হেলিকপ্টার কয়েক দফা তার বাগান ও আশপাশে টহল দিয়ে অসংখ্য গোলা বর্ষণ করেছে। এ কারণে লেবাররা কাজ না করেই বাড়ি ফিরে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার বাহিনীর ছোঁড়া অধিকাংশ গুলি বাইশফাঁড়ি সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় পড়েছে। এছাড়া একটি গুলি পড়েছে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পাহাড়ে।’

এর আগে গত রোববার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে। ওইদিন বেলা ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা ওই মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ ওই সময় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি, রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এতদিন পাহাড়ে গোলা ছুড়লেও আজ উত্তরপাড়ায় মর্টার শেলগুলো পড়েছে। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কে আছে।’

মিয়ানমার থেকে উড়ে এসে বান্দরবান সীমান্তে দুটি মর্টার শেল পড়ার ওই ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে।

কিন্তু প্রতিবাদ জানানোর পরদিন মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) আবার একই কাণ্ড ঘটালো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিজিবি কর্তৃপক্ষের কাছে বক্তব্য নিতে বারবার চেষ্টা করলেও তাদের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!